কালীনগরে এল মহারাষ্ট্র পুলিশ, জামিনে মুক্ত চার

বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া কালনার কালীনগরের চার জন জামিন পেলেন মহারাষ্ট্রে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে দু’রাজ্যেই। শনিবার মহারাষ্ট্র থেকে পুলিশের দুই অফিসার কালীনগর গ্রামে তদন্তে আসেন। এ দিনই কালনা মহকুমা প্রশাসনের দুই ম্যাজিস্ট্রেট গ্রামে গিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:১৫
Share:

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন মহারাষ্ট্র থেকে আসা পুলিশ অফিসার (বাঁ দিকে)। শনিবার কালীনগর গ্রামে।নিজস্ব চিত্র

বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার হওয়া কালনার কালীনগরের চার জন জামিন পেলেন মহারাষ্ট্রে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্তও শুরু হয়েছে দু’রাজ্যেই। শনিবার মহারাষ্ট্র থেকে পুলিশের দুই অফিসার কালীনগর গ্রামে তদন্তে আসেন। এ দিনই কালনা মহকুমা প্রশাসনের দুই ম্যাজিস্ট্রেট গ্রামে গিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন।

Advertisement

শনিবার মুম্বই থেকে ফোনে কালীনগরের বাসিন্দা আলি আকবর মোল্লা জানান, ২৫ জানুয়ারি যে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে নরুল হক মোল্লা, রিনা বিবি,আসগর আলি মোল্লা ও সুমন মোল্লা নামে চার জনের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। জামিনের জন্য ও আইনজীবীর ফি বাবদ লক্ষাধিক টাকা খরচ করতে হয়েছে বলে তাঁর দাবি। আরও দু’জন জুভনাইল হোমে রয়েছে। সোমবারের মধ্যে তাদের নথিপত্রও আদালতে পেশ করা হবে বলে জানান তিনি।

বহু দিন ধরে রোজগারের জন্য মহারাষ্ট্রে যাতায়াত রয়েছে কালীনগরের সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সম্প্রতি সেখানে বিভিন্ন থানা এলাকায় বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করা শুরু হয় অনেককে। ভোটার বা আধার কার্ড দেখালেও মানতে চায়নি সেখানকার পুলিশ। তাতে আতঙ্ক তৈরি হয়। অনেকে বাড়ি ফিরে আসতেও শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে বাসিন্দারা মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে মহারাষ্ট্রের কালওয়া থানার দু’জন অফিসার কালীনগরে পৌঁছন। গ্রামের প্রাক্তন কবাডি খেলোয়াড় হাবিব শেখ বলেন, ‘‘ওই অফিসারেরা মহারাষ্ট্রের নানা জায়গায় কাজ করা গ্রামের কিছু মানুষের ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, স্কুলের শংসাপত্র ঠিক আছে কি না, খোঁজ নেন। স্কুল,রেশন দোকান-সহ নানা জায়গায় যান তাঁরা।’’

এ দিনই কালনা মহকুমার ম্যাজিস্ট্রেট মালবিকা খাটুই ও বিকাশচন্দ্র বিশ্বাস কালীনগরে পৌঁছন। গ্রামের কত জন কোথায় কী কাজে গিয়েছেন, সে সব তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। ছিলেন ধাত্রীগ্রামের প্রধান সঞ্চিতা বসাকও। মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের তরফে শুক্রবার কালীনগরের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে কালীনগর সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে। সে জন্যই দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হয়েছিল।’’ তিনি জানান, মহারাষ্ট্র পুলিশ মহকুমা প্রশাসনের সাহায্য চাইলে করা হবে।

বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ’ নামে এক সংস্থা। সেটির সভাপতি সামিরুল ইসলামের বক্তব্য, ‘‘বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি, এই ধারণা ছাড়তে হবে মহারাষ্ট্র পুলিশকে। প্রকৃত দোষীদের ধরুক, আপত্তি নেই। গরিব মানুষদের বিপদে ফেলা নিয়ে নানা পর্যায়ে চিঠি পাঠিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন