প্রতীকী ছবি।
ডেঙ্গির ঢক্কানিনাদের তলায় এত দিন সে চাপা পড়েছিল। বুধবার কলকাতার সরকারি হাসপাতালে একটি মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য কর্তাদের নজর এ বার ম্যালেরিয়ার দিকে।
স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তার কথায়, এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ম্যালেরিয়ায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ রাজ্যে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এক জনের ক্ষেত্রে
রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। এক জনের রক্ত পরীক্ষায় ম্যালেরিয়ার জীবাণু (প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স) মিলেছে। অন্য জনের ডেঙ্গি উপসর্গ থাকলেও কোনও রোগেরই জীবাণু মেলেনি।
ডেঙ্গিতে এ দিন মৃত্যু হয়েছে কলকাতার শহর সংলগ্ন কেষ্টপুরের জ্যাংড়া হাতিয়াড়ার বাসিন্দা ৫৬ বছরের বিমল রায়ের। দমদম মিউনিসিপ্যালিটি হাসপাতাল থেকে দেওয়া তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি জ্বর লেখা হয়েছে। দেগঙ্গার বেড়াচাঁপার বাসিন্দা ৫৫ বছরের আমজাদ আলি ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। আমজাদের ডেথ সার্টিফিকেট বলছে, জ্বরে লিভার বিকল হয়েই মৃত্যু। শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে
মৃত্যু হয়েছে কসবার বোসপুকুর রোডের বাসিন্দা ৫০ বছরের সোমা সিংহের। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে, সোমাদেবী ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।
ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হলে শতকরা ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা য়ায় জীবাণুটি প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম। কিন্তু সোমাদেবীর রক্ত পরীক্ষায় প্লাজমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স মেলায় চিকিৎসকেরা কিছুটা বিভ্রান্ত। অনেকের প্রশ্ন, তবে কি ডেঙ্গির মতো ভাইভ্যাক্সেরও জিনগত পরিবর্তন হয়েছে? ম্যালেরিয়া বিশেষজ্ঞ অমিতাভ নন্দী অবশ্য বলছেন, কলকাতায় এর আগেও ভাইভ্যাক্স সংক্রমণে মৃত্যুর উদাহরণ রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওই জীবাণুর জিন যদি বদলে যেত তা হলে ভাইভ্যাক্সে মৃত্যুহার অনেক বাড়ত। ওই মহিলার শরীরে হয়তো অন্য কোনও রোগ ছিল কিংবা দুটি ম্যালেরিয়া জীবাণুরই সংক্রমণ ঘটেছিল। রক্ত পরীক্ষায় হয়তো ফ্যালসিপেরাম ধরা পড়েনি।’’