corona virus

ভুয়ো খবর ছড়িয়ে আগুন নিয়ে খেললে ছাড়ব না: কড়া বার্তা মমতার

ভুয়ো খবর রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, ভুয়ো খবর ছড়ালে কাউকে ছাড়া হবে না

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ১৮:৫০
Share:

আলিপুরের রিকশাচালকদের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে—নিজস্ব চিত্র।

করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে লকডাউন চলছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সকলেরই বাইরে বেরনো নিষেধ। তার মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে বিভিন্ন রকমের ভুয়ো খবর। এ বার সেই ভুয়ো খবর রুখতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন, ভুয়ো খবর ছড়ালে কাউকে ছাড়া হবে না।

Advertisement

একই সঙ্গে তিনি করোনা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা-মশকরা করতেও বারণ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কখন কার কী হয়, কে বলতে পারে!’’

করোনা মোকাবিলার আবহে রাজ্যের এমন পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতি দিনই মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করছেন। রাজ্যবাসীর উদ্দেশে দিচ্ছেন বার্তা। শুধু তাই নয়, দোকান-বাজারে যাতে জিনিসপত্রের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে, সেই কাজের তদারকি নিজেই করছেন। এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্ররোচনামূলক কাজ করছেন অনেকে। ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। কেউ ভুয়ো তথ্য ফেসবুক-সহ সোশাল মিডিয়ায় দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সময় মানুষকে সাহায্য করা উচিত। তা না করে কেউ কেউ ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছেন। আমরা কিন্তু তাঁদের খুঁজে বার করবই। এসটিএফ, সিআইডি, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছে। কেউ ছাড় পাবেন না।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামলাতে হবে। পাশাপাশি মানবিকও হতে হবে। কোথাও কেউ অসুবিধায় পড়লে সাহায্য করতে হবে।’’

Advertisement

আরও খবর: আইসোলেশনে থাকা শহরের ফুসফুস ফিরে পাচ্ছে শুদ্ধ বাতাস

এ দিন নবান্ন থেকে বেরিয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আলিপুরে পৌঁছন। সেখানে তিনি রিকশাচালক থেকে শুরু করে পথবাসীদের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন। সেখান থেকে কালীঘাটের একটি নাইট শেল্টারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

নবান্নে এ দিন কী বললেন মমতা:

• উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

• উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

• পোস্তা বাজার চালু আছে। শিয়ালদহ, কোলে মার্কেট-সহ বাংলা জুড়ে বাজার খোলা আছে।

• বাজারে গোল গোল করে দাগ কেটে দেওয়া হচ্ছে। যাতে করোনাভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হতে না পারেন।

• ডিএম-এসপিদের মানবিক ভাবে বিষয়গুলি দেখতে হবে। মানুষের সমস্যা হলে মানবিক ভাবে দেখে নিতে হবে। পুলিশ কিছু বিষয়ে ভাল কাজ করেছে।

• আমরা ১২টি অভিযোগ পেয়েছিলাম। সাত-আট জন পুলিশকর্মীকে ক্লোজ করা হয়েছে। পুলিশকে এক দিকে শক্ত হতে হবে, আবার মানবিকও হতে হবে।

• ওষুধের কোনও অভাব নেই। আমরা সব দিকে নজর রাখছি। কোথাও কোনও অসুবিধা নেই।

• কেউ দোকানে ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন, রেশন আনতে যাচ্ছেন, তাঁদের সাহায্য করতে হবে। আটকানো চলবে না। ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।

• কেউ ভিড় করবেন না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের গাড়ি যাতে আটকে না যায়, তা দেখতে হবে।

• সারা পৃথিবীতে সঙ্কট চলছে। আমরা সহযোগিতা চাইছি রাজ্যের মানুষের কাছ থেকে।

• ধর্মীয় সংগঠনগুলিকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রত্যেকেই নিয়ম মেনে চলছেন। তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

• আবার ৩১ তারিখ পর্যালোচনা বৈঠক হবে। তখন সিদ্ধান্ত নেব। কেন্দ্রীয় সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

• আপৎকালীন ত্রাণ তহবিল গঠন করা হয়েছে। তাতে কেউ যদি সাহায্য করতে পারেন, ভাল। আয়কর দিতে হবে না তাতে। অনেক কর্পোরেট আছে। তারা দিতে পারে।

• রাজ্য সরকারের কন্ট্রোলরুম তৈরি করা হয়েছে। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে নবান্ন যোগাযোগ রাখছে।

• ৫ হাজার থার্মাল গান পাওয়া গিয়েছে। আরও ৫ হাজার অর্ডার দেওয়া হয়েছে।

• পিপিই-ও পেয়েছি। আরও অর্ডার দেওয়া হয়েছে।

• হ্যান্ড স্যানিটাইজারও তৈরি হচ্ছে এখানে।

• যাঁরা আটকে রয়েছেন ভিন্‌রাজ্যে, তাঁদের জন্য ১৮ জন মুখ্যমন্ত্রীকে আমি চিঠি লিখেছি।

• কলকাতায় ২৭টি নাইট শেল্টার রয়েছে। রাস্তায় না থাকার জন্য অনুরোধ করছি। হাওড়া থেকে শুরু করে অনেক জায়গাতেই আছে নাইট শেল্টার। সেখানে থাকুন।

• ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, আশাকর্মী সকলের জন্য বিমা করা হয়েছে।

• ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। এক ডাক্তারবাবুর নাম করে বলছেন, তিনি নাকি অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তা নিয়ে ফেসবুকে দিয়েছেন। পুলিশকে তদন্ত করতে বলছি। এই ধরনের প্ররোচনা মূলক কাজ করা যাবে না।

• যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের হতেই পারে। কাল আমার হবে কি না কী করে জানব? কাল অনুজের হবে না, রাজীবের হবে কি না কী করে জানব? ঠাট্টা, মশকরা করছেন অনেকে। তাঁদের বলব, আগুন নিয়ে খেলবেন না। ঠাট্টা করার সময় নয়।

• ভুয়ো খবর খুঁজে বার করবই। এসটিএফ, সিআইডি, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ কাজ করছে। কেউ ছাড় পাবেন না।

আরও খবর: মৃত্যুর আগে অন্তত ২৩ জনকে সংক্রমিত করেছেন পঞ্জাবের করোনা-আক্রান্ত

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন