—ফাইল চিত্র।
দু’বছরেরও বেশি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ভোট বন্ধ। এ বার সেই ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার মমতা বলেন, ‘‘ছাত্র-নির্বাচন হবে। শান্তিপূর্ণ ভাবে এই ভোট করতে হবে। এর জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।’’
তৃণমূল জমানায় ছাত্র-ভোট ঘিরে গোলমালের অভিযোগ বিস্তর। বিরোধী ছাত্র সংগঠনকে মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি জোর করে ছাত্র সংসদ দখলেরও অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের(টিএমসিপি) বিরুদ্ধে। শিক্ষাঙ্গনের সেই ভোট-নৈরাজ্যে বিড়ম্বনায় পড়েই এতদিন ছাত্র ভোট বন্ধ রাখার কৌশল নিয়েছিল শাসক দল। কিছুদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ছাত্রভোট করার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, আপাতত রাজ্যের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যাদের অধীনে কোনও কলেজ নেই) ছাত্রভোট করা হবে। উচ্চশিক্ষা দফতর নির্দেশিকা জারি করে জানায়, ছাত্র ইউনিয়ন বা কাউন্সিল তৈরির জন্য যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি, রবীন্দ্রভারতী ও ডায়মন্ড হারবার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রভোট করতে পারে। ভোটের দিনক্ষণ ও নিয়মবিধি ওই চার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষই স্থির করবে।
তবে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পরীক্ষা রয়েছে। সে কারণে এই ক’মাসের মধ্যে ছাত্র-ভোটের সম্ভাবনা কম বলেই ছাত্র সংগঠনগুলির ধারণা। টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের সংগঠন তৈরি। যে কোনও সময়ে ভোট হলেই আমাদের প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলা হবে। আর ভোটে টিএমসিপি-র জয় অবধারিত।’’ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের রাজ্য সম্পাদক সপ্তর্ষি সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সুষ্ঠুভাবে ভোট করা তো প্রশাসনের দায়িত্ব। আর শাসক দলের ছাত্র সংগঠন কী ভাবে শক্তি প্রদর্শন করবে, তাদের কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা-ও মুখ্যমন্ত্রীরই দায়িত্ব। সত্যিই শান্তিপূর্ণ ভোট হলে, তাকে স্বাগত জানাব।’’ এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, ‘‘না আঁচালে বিশ্বাস নেই। টিএমসিপি পেশিশক্তির জোরে যে ভাবে কলেজ দখল করত, সেই পরিস্থিতি এখন আর নেই। তবে ছাত্রভোটের নামে প্রহসন হলে ছাত্রসমাজ তা প্রতিরোধ করবে।’’
আরও পড়ুন: দেশের নয়া মানচিত্র মেনেই প্রশ্ন মাধ্যমিকে
ছাত্র-ভোটের পাশাপাশি বিজেপি-প্রভাবিত বিভিন্ন এলাকার কলেজে ছাত্র সংসদকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে এ দিন মমতা অভিযোগ করেন। ছাত্রদের সেই সব অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করার জন্য শিক্ষকদের কাছে আবেদন করে মমতা বলেন, ‘‘ছাত্ররা যেমন শিক্ষকদের সম্মান করবে, তেমনই শিক্ষকরাও ছাত্রদের আশীর্বাদ করবেন, সহযোগিতা করবেন। তা হলেই শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হবে।’’