লগ্নির আহ্বান ওলন্দাজ মুলুকে

ভারতীয় দূতাবাস জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব নেদারল্যান্ডসে এসেছিলেন এখানকার বাইসাইকেল সংস্কৃতির কথা জানতে। এই দেশের প্রতিটি শহরে সড়কের পাশেই সাইকেল ট্র্যাক রয়েছে। ট্রাফিক সিগন্যালে মোটরগাড়ির চেয়ে সাইকেল বেশি।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

দ্য হেগ শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৫:০০
Share:

লগ্নি বিনিময়ের সম্পর্কটা আজকের নয়। শুরু হয়েছিল ১৯৩০ সালে। ভারতের ঘরে ঘরে নেদারল্যান্ডসের সব চেয়ে জনপ্রিয় যে নাম, তা হল ফিলিপ্‌স। সেই ওলন্দাজ কোম্পানি কলকাতা থেকেই তাদের ব্যবসা শুরু করেছিল স্বাধীনতার সতেরো বছর আগে। বন্দরের দেশে আবার লগ্নির আহ্বানে শিল্প সম্মেলন করল সেই কলকাতাই। নেতৃত্বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

ভারতের কোনও রাজ্য পৃথক ভাবে এ দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কে এমন উদ্যোগী হয়েছে বলে মনে করতে পারলেন না নেদারল্যান্ডসের সবচেয়ে বড় বণিকসভা ভিএনও এনসিডব্লিউ-এর সভাপতি হান্স ডি বোর। তাঁর কথায়, ‘‘৯ কোটির রাজ্যের ৭ বছরের মুখ্যমন্ত্রীর যে শিল্পোদ্যোগ, তাতে এখানকার সংস্থাগুলি সামিল হবে। ২০১৮-র জানুয়ারিতে বিশ্ব বঙ্গ শিল্প সম্মেলনে বিরাট দল নিয়ে যাব।’’

ভারতীয় দূতাবাস জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব নেদারল্যান্ডসে এসেছিলেন এখানকার বাইসাইকেল সংস্কৃতির কথা জানতে। এই দেশের প্রতিটি শহরে সড়কের পাশেই সাইকেল ট্র্যাক রয়েছে। ট্রাফিক সিগন্যালে মোটরগাড়ির চেয়ে সাইকেল বেশি। অখিলেশও লখনউয়ে সাইকেল ট্র্যাক বানিয়েছিলেন। মমতার কথায়, ‘‘ও তো এসেছিল পার্টির প্রতীকের প্রচারে। আমি এসেছি লগ্নি আহ্বানে।’’

Advertisement

ডাচ বণিকসভার কর্তার কথায়, ‘‘আগামী দু’সপ্তাহ ভারতের। প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী। পরের সপ্তাহে আসছেন প্রধানমন্ত্রী।’’ একই কথা জানাচ্ছেন ভারতের রাষ্ট্রদূত বেণু রাজামণি। তিনি বলেন, ‘‘৩০ বছর পরে কোনও প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসে আসছেন। গত দু’বছরে থেকে এ দেশ থেকে সাড়ে চারশো কোটি ডলার বিনিয়োগ হয়েছে ভারতে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যের লগ্নির খোঁজ বিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে।’’

এই পরিপ্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘স্বচ্ছতা, বিশ্বাসযোগ্যতা আর দায়বদ্ধতা— এই তিন নীতি নিয়েই এগোচ্ছি। লগ্নি করতে চাইলে আসুন। কোনও বাধার মুখে পড়তে হবে না। টোটালটাই টেক কেয়ার করে নেওয়া হবে।’’

রাজ্যের কাছে যে সব সময়ে পূর্ণ সহযোগিতা মেলে, নেদারল্যান্ডসের শিল্পপতিদের তা জানান মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী শিল্পপতিরা। পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় থেকে হর্ষ নেওটিয়া, তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা থেকে রমেশ জুনেজা, সকলের এক কথা— সমস্যায় পড়লেই ছুটে গিয়েছি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। পেয়েছি সহযোগিতা। এ বার বেশ কয়েক জন তরুণ শিল্পোদ্যোগীকেও হাজির করেছিলেন শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। উমেশ চৌধুরি, মায়াঙ্ক জালান, মেহুল মোহানকা, প্রশান্ত মোদীরা বলেন, রাজ্য এগোচ্ছে সঠিক পথেই। এখনই উপযুক্ত সময় রাজ্যে লগ্নি করার।

সম্মেলন শেষে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ধরেন নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দেশের বিভিন্ন শহর থেকে তাঁরা সপরিবার এসেছিলেন এই সম্মেলনে। যা দেখে মুখ্যমন্ত্রী উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন,‘‘এ বার ছোট করে করলাম। পরে আরও বড় হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন