প্রবীণদের ‘গুরুত্ব’ দিয়ে  এ বার অন্য বার্তা মমতার

এ দিন দলের শীর্ষ নেতাদের প্রায় সকলেরই নাম শোনা গিয়েছে মমতার মুখে। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই ভাবেন, সব কাজ দিদি একা করেন। তা কিন্তু নয়।’’ তাঁকে কারা কাজে সাহায্য করেন, তা বলতে গিয়ে  পরপর বলে যান বক্সী, পার্থবাবু, ফিরহাদ, অরূপ, শোভন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এমন সকলেরই নাম।

Advertisement

নিজস্ব  সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

ব্যস্ত: শিলিগুড়িতে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

এক ছাত্র-যুব সমাবেশে তিনি দলের উত্তরাধিকারের ব্যাটন অভিষেক-শুভেন্দুর হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। আবার তিন দিন পরে আর এক ছাত্র-যুব সমাবেশেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে দলের সব বর্ষীয়ান নেতার নাম। হাওড়ার ডুমুরজলা থেকে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম। নতুন বক্তব্যে এ ভাবেই দল পরিচালনায় নবীন-প্রবীণ ‘সমন্বয়ের’ বার্তা দিতে চাইলেন তৃণমূল নেত্রী।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, শুক্রবার ডুমুরজলায় তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর নাম নেওয়ার পরে দলে নানা জল্পনা শুরু হয়। প্রশ্ন ওঠে, দলে কি ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বদলাচ্ছে? মমতা-ঘনিষ্ঠ ত্রয়ী শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসের অবস্থান কি বদলাবে? কী করবেন দুই প্রবীণ নেতা সুব্রত বক্সী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সংগঠনের মাথায় অভিষেককে তৃণমূল নেত্রী নিজেই ‘প্রতিষ্ঠা’ দিচ্ছেন কি না, গুঞ্জন তা নিয়েও। সেই সব জল্পনার মুখেই সোমবার শিলিগুড়ির সভায় সব প্রবীণের নাম নিয়ে মমতা ‘ভারসাম্যে’র পাল্টা বার্তা দিতে চাইলেন বলে মনে করছেন দলের একাংশ।

এ দিন দলের শীর্ষ নেতাদের প্রায় সকলেরই নাম শোনা গিয়েছে মমতার মুখে। তিনি বলেন, ‘‘অনেকেই ভাবেন, সব কাজ দিদি একা করেন। তা কিন্তু নয়।’’ তাঁকে কারা কাজে সাহায্য করেন, তা বলতে গিয়ে পরপর বলে যান বক্সী, পার্থবাবু, ফিরহাদ, অরূপ, শোভন, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এমন সকলেরই নাম। বাদ দেননি জেলা এবং ব্লকস্তরের নেতাদেরও। আর এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভাবে এ দিন মাত্র একবারের জন্য ছুঁয়ে যান শুভেন্দুকে। বার দুয়েক নাম নেন অভিষেকের। শুভেন্দু অবশ্য এ দিনের সভায় ছিলেন না।

Advertisement

মমতা সচেতনভাবেই এত দিন অভিষেককে নেতা হিসেবে আলাদা ‘গুরুত্ব’ দিতে চাননি। বরং পুরনো বর্ষীয়ান নেতাদের থেকে তাঁকে পিছিয়েই রাখতেন। তাঁর অভিমত ছিল, অভিষেক অন্যদের মতোই কাজের মধ্য দিয়ে যথাসময়ে উঠে আসবে। তবে ডুমুরজলার সভা ছিল ব্যতিক্রম। যেখানে তিনি আগামী প্রজন্ম তৈরির জন্য নির্দিষ্ট ভাবে অভিষেককে নেতা হিসেবে এগিয়ে দেন। পাশাপাশি শুভেন্দুর মতো সাংগঠনিক দক্ষতাসম্পন্ন নেতাকেও একই বন্ধনীতে জুড়ে দেন। তৃণমূলের এক নেতার ব্যাখ্যায়, দলের প্রবীণদের মধ্যে পাছে কোনও ‘বিরূপ’ বার্তা যায়, তাই এ দিন আবার নেতৃত্বের পুরনো তালিকা ঝালিয়ে দিলেন নেত্রী। পাশাপাশি ওই নেতার আরও দাবি, তৃণমূলের শীর্ষে ‘একজন’ই। দুই, তিন, চার নম্বরের কোনও তালিকা নেই। ডুমুরজলার পরে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে যে কথা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন অভিষেক নিজেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন