West Bengal Assembly Election 2026

নীতীশের জয় দেখে মহিলা ভোট বাড়াতে ভাঁড়ারে চোখ মমতার

বিহারের বিধানসভা ভোটে নীতীশ কুমার সরকারের প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা ঠেকাতে মহিলাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। প্রতিবেশী রাজ্যে মহিলাদের অংশগ্রহণ বেশি তা-ই নয়, এ বার সেই ভোটে বিজেপি-নীতীশ জোট অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে বলে বিশ্লেষণে ধরা পড়েছে।

রবিশঙ্কর দত্ত

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৩০
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।

মহিলাদের ভোট বাড়াতে হবে— এই মন্ত্রে ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটে নামছে তৃণমূল কংগ্রেস। সরকারি প্রকল্পের বাইরে থাকা মহিলাদের নিয়েই এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিমার্জিত চালু প্রকল্প হোক বা নতুন প্রকল্পে জুড়ে দুই-তিন শতাংশ মহিলা ভোট বাড়াতে চেয়ে সরকারি ভাঁড়ারের হালও দেখে নিচ্ছে শাসক শিবির।

বিহারের বিধানসভা ভোটে নীতীশ কুমার সরকারের প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা ঠেকাতে মহিলাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে। প্রতিবেশী রাজ্যে মহিলাদের অংশগ্রহণ বেশি তা-ই নয়, এ বার সেই ভোটে বিজেপি-নীতীশ জোট অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে বলে বিশ্লেষণে ধরা পড়েছে। বিহারের অভিজ্ঞতায় দলের নির্বাচনী কৌশল সাজাতে চাইছে তৃণমূল। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিহারে এই ইঙ্গিত রয়েছে। তবে এ রাজ্যে গত ১৫ বছরে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা বিলি করে মহিলাদের বড় অংশেরসমর্থন তৃণমূলই পেয়েছে। আমাদের ২০১৬ ও ২০২১ সালের সেই ধারা অটুট রাখতে হবে।’’

অন্যান্য দিকে ক্ষয়ের আশঙ্কার মধ্যে এই অংশ অটুট রাখলেই যে চলবে না, তা-ও মেনে নিচ্ছে তৃণমূল। রাজ্যে অন্যান্য নানা বিষয়ে যে তীব্র প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা রয়েছে, তা সামাল দিতে মহিলাদের সমর্থন আরও কিছুটা বাড়াতে চাইছে দলের পরামর্শদাতা সংস্থা। রাজ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট ছিল ৪৮%-এর বেশি। কিন্তু তিন বছরের মাথায় লোকসভা ভোটে তা দুই শতাংশ কমেছে। উল্টো দিকে প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপি ২০২১ সালের বিধানসভা ও ’২৪ সালের লোকসভা ভোটে নিজেদের ভোট সামান্য বাড়াতে পেরেছে। দলীয় সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তৃণমূলের পক্ষে পুরুষের থেকে মহিলাদের সমর্থন তিন শতাংশ বেশি। বিজেপির মহিলা সমর্থন পুরুষের তুলনায় দুই শতাংশ কম।

তবে আর জি কর হাসপাতালের শিক্ষক-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল তৃণমূলকে। জনমানসে ক্ষোভ ও লাগাতার সরকার- বিরোধী আন্দোলনের সামনে সঙ্কটে পড়ে গিয়েছিল তারা। দলের নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনায় সে প্রসঙ্গ রয়েছে। তবে পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে মানুষের মনে যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল, সিবিআইয়ের তদন্তের প্রেক্ষিতে তা কিছুটা লঘু হয়েছে বলেও ধারণা তৃণমূলের। এই প্রেক্ষাপটে আরও দুই-তিন শতাংশ মহিলা ভোট পক্ষে আনা সহজ না হলেও সম্ভব বলে মনে করছেন তাঁরা।

শাসক দলের হিসেব, গত পাঁচ বছরে মোট ভোট কমলেও মহিলাদের সমর্থন কমেনি। তাকে স্বীকৃতি দিয়ে ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে প্রকাশিত রিপোর্ট-কার্ডের নাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়নের পাঁচালি’। প্রচারের সেই ‘পাঁচালি’ হাতে দলের মহিলা কর্মীরাও বাড়িবাড়ি যাবেন। এ বারের ভোটের অন্যতম বড় এই প্রচার কর্মসূচি শুরু হচ্ছে আগামী সপ্তাহে। তবে শুধু প্রচারে চিঁড়ে ভিজবে না বলেই নারীকেন্দ্রিক নতুন সুবিধা-প্রকল্প জরুরি বলে মনে করছেন ভোট-কৌশলীরা। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও দলের ‘ভোট রক্ষা সমাবেশ’ থেকে ইদানিং ইঙ্গিত দিয়ে রাখছেন, ‘‘বিহারে এক বার ১০ হাজার টাকা দিয়েছে। আমাদের এখানে মহিলারা ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ ১২ মাস পান। যত দিন বাঁচবেন, তত দিন পাবেন। আরও কিছু করা যায় কি না, আমাদের ভাবনায় আছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন