শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার, কলকাতা ও আশপাশের পাঁচটি জেলার সাংসদ, বিধায়কদের নিয়ে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকে স্থির হয়, একাদশীর দিন প্রতিমা বিসর্জন দিতে গেলে পুলিশের অনুমতির প্রয়োজন হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথাযথ হলে তবেই মিলবে অনুমতি।
আরও পড়ুন: বিসর্জনের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজই সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, একাদশীর দিন, অর্থাৎ ১ অক্টোবর মহরমের মিছিলের পাশাপাশি প্রতিমা বিসর্জনও দেওয়া যাবে। তবে, বিসর্জন এবং ধর্মীয় মিছিল কোন রাস্তা দিয়ে যাবে, তা নির্ধারণ করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসকের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তবেই একাদশীর দিন বিসর্জন করা যাবে। আর বিসর্জনের রুট ঠিক করে দেবে পুলিশ।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সরকার মনে করছে এই রায় প্রকৃতপক্ষে জয় হয়েছে তাদেরই। কারণ, মহরম এবং বিসর্জনের শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার পুলিশ প্রশাসনের হাতে ছাড়ার ফলে প্রকারান্তরে জয় হয়েছে রাজ্য সরকারেরই। অন্য দিকে, বিরোধীপক্ষের দাবি, মহরমের দিন বিসর্জন বন্ধ রাখারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তার বিরুদ্ধেই জনস্বার্থ মামলা হয়। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞার উপরেই স্থগিতাদেশ জারি করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। তাই জয় হয়েছে, বিরোধীপক্ষেরই।
আরও পড়ুন: পুজো ছেঁটে পুরস্কার মহরমে লাঠিখেলায়
চলতি বছর একই দিনে পড়েছে একাদশী ও মহরম। একথা মাথায় রেখেই একাদশীর দিন দুর্গাপুজোর বিসর্জন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সেই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। ওই মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার আদালত স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেয়, একাদশীর দিন, অর্থাৎ ১ অক্টোবর মহরমের সঙ্গে প্রতিমা বিসর্জনও দেওয়া যাবে। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞার উপরে স্থগিতাদেশ জারি করে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি ও বিচারপতি হরিশ টন্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, দশমী থেকে ৪ অক্টোবর প্রতিদিন রাত ১২টা পর্যন্ত বিসর্জন হবে। বিসর্জনের শোভাযাত্রা ও ধর্মীয় মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের সংযত আচরণ করার নির্দেশও দেয় আদালত।