Mamata Banerjee

দিল্লির নজর, সতর্কবার্তা মমতার

আবাস ও ১০০ দিনের কাজের মতো কয়েকটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে বার বার দিল্লির ‘নজরে’ পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রকম প্রকল্পগুলির স্বচ্ছতা যাচাই করতে এসেছে কেন্দ্রীয় দলও।

Advertisement

রবিশঙ্কর দত্ত

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

রাজ্যে সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে স্বচ্ছতার উপরে বিশেষ জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিবিধ ‘নজরদারি’র দিকেও ইঙ্গিত করেছেন তিনি।

Advertisement

মঙ্গলবার সিঙ্গুরে রাজ্য সরকারের রাস্তা তৈরি ও মেরামতির বৃহৎ প্রকল্প ‘পথশ্রী’ এবং ‘রাস্তাশ্রী’র উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই প্রকল্পে যে ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা হবে, তা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রামসভা করবে। মনে রাখবেন, কেন্দ্রের নজরদারি (মনিটরিং) থাকবে। কে, কোথায় টেন্ডার করছেন, কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, দেখতে হবে।”

আবাস ও ১০০ দিনের কাজের মতো কয়েকটি কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে বার বার দিল্লির ‘নজরে’ পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এ রকম প্রকল্পগুলির স্বচ্ছতা যাচাই করতে এসেছে কেন্দ্রীয় দলও। নতুন করে তেমন কোনও পরিস্থিতি যাতে না আসে, তা নিশ্চিত করতে এ দিন সিঙ্গুরের রতনপুরের সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে প্রকাশ্যেই এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই প্রকল্পে রাজ্যের ২২ টি জেলায় প্রায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করবে পঞ্চায়েত দফতর। এ দিন রতনপুরে তারই একটির ইট গেঁথে আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করে মমতা বলেন, “কাজগুলো যেন বর্ষার আগে শেষ হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্ষাকালে কাজ করা যায় না।” মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়ে দেন, ‘‘এই রাস্তা তৈরি করতে পৌনে চার কোটি টাকা খরচ হবে। তার একটি টাকাও দিল্লির (কেন্দ্রীয় সরকারের) নয়।’’ প্রশাসনিক মহলে একাংশের ধারণা, গ্রামীণ রাস্তা তৈরির এই সময়সীমার বেঁধে দেওয়ার মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভাবনাও থাকতে পারে শাসক শিবিরে। এখনও পর্যন্ত আলাপ- আলোচনা যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে মে মাসের মাঝামাঝি রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট চাইতে পারে তারা। রাজ্যে পঞ্চায়েতের তিনস্তরেই তৃণমূলের একচেটিয়া শাসন। সেখানে ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ে যাওয়ার পরে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির এ রকম বড় প্রকল্পের সূচনা এবং তার দায়িত্ব পঞ্চায়েতের হাতে দেওয়ার সঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তায় নতুন করে দুর্নীতি এড়ানোর সতর্কতা দেখছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

এই রাস্তা তৈরির কাজে ১০০ দিনের কাজে নাম নথিবদ্ধ রয়েছে এমন লোকেদেরই নেওয়ার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জবকার্ড আছে, এমন লোকেরা দীর্ঘদিন তাঁদের কাজের টাকা পাননি। ভোটের মুখে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের এই পরিকল্পনার পিছনেও যে ভোটের ভাবনাই কাজ করেছে, তা স্পষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘জবকার্ড আছে এমন লোকেদের দিয়েই কাজ করাতে হবে। নতুন তালিকা তৈরি করলে, আমরা তা বাতিল করে দেব।’’ সরকারের অন্যান্য দফতরের কাজেও এই জবকার্ড আছে এমন লোকেদের নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন