সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেই ভাল মানুষের সার্টিফিকেট!

বরাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী। কোনও কালে প্রাক্তনকে ছেড়ে কথা বলেননি বর্তমান। এখন নারদের গেরোয় শেষে কি না সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম করেই ভাল মানুষের সার্টিফিকেট আনতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য

বরাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী। কোনও কালে প্রাক্তনকে ছেড়ে কথা বলেননি বর্তমান। এখন নারদের গেরোয় শেষে কি না সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম করেই ভাল মানুষের সার্টিফিকেট আনতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে!

Advertisement

দলের সাংসদ এবং অর্থলগ্নি সংস্থার মালিক কেডি সিংহ প্রসঙ্গে এবিপি আনন্দে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বুদ্ধবাবুর সঙ্গে ছবি দেখেছিলাম। ওঁকে ভাল লোক বলেই জানতাম!’’ ওই মন্তব্যের জেরেই তাঁকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। বুদ্ধবাবু মুখ খোলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক সিপিএম নেতার মন্তব্য, ‘‘যখন যেটা বললে সুবিধা হয়, তখন উনি সেটাই বলেন! এই তো আগে বলতেন, চিট ফান্ড কর্তাদের সঙ্গে বুদ্ধবাবুর ছবি আছে। এখন আবার তাঁর সঙ্গে ছবির জন্যই কেডি ভাল লোক হয়ে গেলেন!’’

মুখ্যমন্ত্রীকে শুক্রবার সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘সততার প্রতীক আর বাজারে চলছে না! এখন বুদ্ধবাবুকে ঢাল করতে হচ্ছে নিজেদের বাঁচানোর জন্য! লজ্জাজনক!’’ একই সুরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘কেডি-র দায় ঝেড়ে ফেলার জন্য হঠাৎ বুদ্ধবাবুকে ঢাল করতে হল! তার মানে ঘুরপথে উনি মেনে নিচ্ছেন, বুদ্ধবাবু ভাল লোক ছিলেন!’’

Advertisement

আরও পড়ুন: কেডি-র সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত

কেউ কেউ আবার এও মনে করছেন যে, বুদ্ধবাবুকে ‘ভাল লোক’ বলার থেকেও মমতার আসল উদ্দেশ্য হল, ঘুরিয়ে কেডি-কেও এক সময়কার বাম-ঘনিষ্ঠ বলে প্রমাণ করা। যে ভাবে মমতা দাবি করেন, চিটফান্ডের রমরমার জন্য বামেরাই দায়ী, কেডি আর বুদ্ধবাবুর প্রসঙ্গ সেই সূত্রেই। সে ক্ষেত্রে আবার

সুজনবাবুদের দাবি, সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া কেডি-র মতো ব্যক্তির সঙ্গে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ছবি মমতা দেখাতে পারবেন না। যদিও শুধু ছবি থেকে কিছু প্রমাণিত হয় না।

মমতা দাবি করেছিলেন, চাইলেই তিনি ১০-১২ জন বিরোধী নেতাকে জেলে ভরতে পারেন। কিন্তু রাজনৈতিক সৌজন্য দেখিয়ে তা করছেন না। সেই সূত্রেও বুদ্ধবাবুর প্রসঙ্গ এনে সুজনবাবুর চ্যালেঞ্জ, ‘‘সাড়ে পাঁচ বছরে বুদ্ধবাবু, সূর্যকান্ত মিশ্র বা গৌতম দেবকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর কম চেষ্টা করেননি মমতা। চিট ফান্ড মামলায় আমাকে সিট নোটিস পাঠিয়েছিল। হিম্মত থাকলে গ্রেফতার করুন!’’

বস্তুত বিরোধী নেতারা এ দিন দাবি করেছেন, কেডি-কে নিয়ে তৃণমূল নেত্রী সবই জানতেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী যেমন দিল্লিতে বলছেন, ‘‘এত দিন কেডি-র থেকে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এসেছেন, এখন দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন।’’ কেডি-র সংস্থা অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একাধিক বার চিঠি পাঠিয়েছিলেন সিপিএম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেডি এত দিন তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে সাঁকো হিসেবে কাজ করেছেন। মমতার সরকারই অ্যালকেমিস্টের বিরুদ্ধে এফআইআর হতে দেয়নি। এখন তিনি পুলিশের তদন্তকারী দল তৈরি করছেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement