ছুটি রাবেয়াদের

রাবেয়াদের হাসপাতালে রেখে দেওয়া নিয়ে পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কেউই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাইছে না। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের তরফে তাঁদের জানানো হয়, দুই বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৭
Share:

লঙ্ঘন: হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে এ ভাবেই মঞ্চে উঠে পড়েছিলেন রাবেয়া। ফাইল চিত্র।

তাঁরা দু’জনই সুস্থ। পুলিশও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করেনি। অথচ দিনের পর দিন তাঁদের হাসপাতালে আটকে রাখা হচ্ছে। করণদিঘি থানার ছাগলকাটি গ্রামের রাবেয়া ও আসনুরা খাতুনের দিদি সুলেখা এবং বোন সাবিনা এই অভিযোগে তোলেন। শুক্রবার বিষয়টি তাঁরা জেলা পুলিশ সুপারের নজরে আনেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, তার পরেই তৎপরতা বৃদ্ধি পায় হাসপাতালে। ওই দিনই রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ রাবেয়া ও আসনুরাকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার সাত সকালে পুলিশ গাড়িতে চাপিয়ে তাঁদের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

Advertisement

বস্তুত, রাবেয়াদের হাসপাতালে রেখে দেওয়া নিয়ে পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, কেউই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাইছে না। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের তরফে তাঁদের জানানো হয়, দুই বোনকে জিজ্ঞাসাবাদের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চাইলে তাঁদের ছুটি দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও আপত্তি নেই। এর পরেই হাসপাতাল সুপার ওই দুই তরুণীর চিকিত্সার দায়িত্বে থাকা ডাক্তারদের ছুটি লিখে দিতে বলেন।

পুলিশের সঙ্গে তাঁদের কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে হাসপাতাল সুপার গৌতম মণ্ডল অবশ্য বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, রাবেয়া ও আসনুরা সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। তাই তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

উল্টো দিকে, উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহের দাবি, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাবেয়া ও আসনুরাকে ছুটি দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে পুলিশের কোনও বক্তব্য নেই। যদিও জেলা পুলিশ কর্তাদের একাংশের দাবি, রাবেয়া ও আসনুরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তাঁদের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে উঠে আসা সমস্ত তথ্য রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কাছে পাঠানোর পরেই পুলিশ সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি হেমতাবাদ থানার মাঠে জেডপ্লাস নিরাপত্তার ফাঁক গলে ডিজোন পেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে উঠে পড়েন রাবেয়া। মঞ্চে উঠতে গিয়ে ডি জোনে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যান আসনুরা।

রাবেয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আসনুরার সরকারি চাকরি ও তাঁদের বাবাকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসি দাবি জানিয়েছিলেন।

রাবেয়ার দাবি, ‘‘জেলাশাসক সে দিন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে বলেছিলেন, আমাকে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে আমাকে এজেন্সির মাধ্যমে ওই হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মীর পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেয় পুলিশ।’’ এর পরেই জোড় গলায় তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘আমি ওই চাকরি করব না। আমাকে ও আমার বোনকে সরকারি চাকরি দেওয়া ও আমার বাবার খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে আমাদের লড়াই চলবে। প্রয়োজনে আমরা কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ও নবান্নেও যাব।’’

ওই দুই তরুণীর সরকারি চাকরির দাবি প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন