গ্রামে যান, খাটিয়ায় বসুন, মানুষের কথা শুনুন, নেতাদের নির্দেশ মমতার

বুথ ভিত্তিক সংগঠন গড়ে ভোটে নামা বিজেপির কর্মসূচি। বিভিন্ন রাজ্যেই এই ছকেই তারা নির্বাচনী কৌশল তৈরি করে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৯ ০২:২১
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এবারের লোকসভা ভোটের ফল দেখে দলের জনবিচ্ছিন্নতা নিয়ে আলোচনা চলছিল শাসক তৃণমূলে। রবিবার একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে জনসংযোগের লম্বা কর্মসূচি ঘোষণা করে তাতে কার্যত ‘সিলমোহর’ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতাকর্মীদের দেওয়া তিন মাসের এই কর্মসূচির মূল সুর—‘শহর ছেড়ে গ্রামে যান। বুথে- বুথে, চায়ের দোকানে, খাটিয়ায় বসে মানুষের কথা শুনুন।’ তাঁদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘কেউ আমাদের ভুল বুঝে থাকলে তাঁদের কাছে গিয়ে বোঝাতে হবে।’’

Advertisement

বুথ ভিত্তিক সংগঠন গড়ে ভোটে নামা বিজেপির কর্মসূচি। বিভিন্ন রাজ্যেই এই ছকেই তারা নির্বাচনী কৌশল তৈরি করে। ভোটার তালিকার প্রতিটি পাতা ধরে দলের একেকজনকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁদের বলা হয় ‘পন্না প্রমুখ।’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মমতা বুথ ভিত্তিক সংগঠনকে সক্রিয় করে বুথ স্তর থেকে জনসংযোগের উপর জোর দিয়ে বিজেপির ‘পন্না কৌশল’ মোকাবিলার রাস্তা তৈরি করতে চাইছেন।

এদিন তা স্পষ্ট করে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের জনসংযোগ যাত্রাকে বুথ স্তরে নিয়ে যেতে চাই। রাজনীতি করতে হবে বুথে গিয়ে। চায়ের দোকানে, গরিব, তফসিলি, সংখ্যালঘু, আদিবাসী মানুষের ঘরে খাটিয়ায় বসে কথা বলতে হবে।’’ আগামী ২৯ তারিখ রাজ্যের ২৯৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য দলের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি জানানো হবে বলেও এদিন জানিয়েছেন তিনি। বুথ স্তরের কর্মীদের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা কেউ এমএলএ, এমপি, পঞ্চায়েতের পদাধিকারী হন না। কিন্তু তাঁরাই বড় শক্তি।’’ তৃণমূলের এই রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এসি গাড়ি, এসি বাড়ি, গদিতে বসার অভ্যাস হয়ে গেছে তৃণমূলের। এখন আদিবাসীর বাড়ির খাটিয়ায় বসবে কী করে? এটা আমরাই পারি। করি।’’

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের বক্তৃতায় তৃণমূলের অন্দরে শুদ্ধকরণের বার্তাও ছিল স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘টাকার জন্য রাজনীতি করবেন না। টাকার জন্য রাজনীতি করলে মানুষ গ্রহণ করে না। টাকা আসে, টাকা যায়। মানুষ বেঁচে থাকে।’’ এই প্রসঙ্গেই বিজেপির বিরুদ্ধে অর্থের প্রলোভন দিয়ে দল ভাঙার অভিযোগও করেন তৃণমূলনেত্রী।

দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘যারা টাকা নিয়ে বেইমানি করেছে তাদের চিহ্নিত করুন। এরা আমাদের লোক নয়। খোঁজ করুন, এরা কোথা থেকে এসেছে।’’ এই প্রসঙ্গেই মমতা বলেন, ‘‘তৃণমূল একটা উন্নততর চরিত্র গঠন করুক। তৃণমূল আদর্শ দল হিসেবে ঘুরে দাঁড়াক।’’ সেই সঙ্গেই অভ্যন্তরীণ বিরোধের উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘কেউ ডাকেনি বলে অভিমান করে থাকবেন না। দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যাওয়া আপনার অধিকার।’’ দলের নিষ্ক্রিয় অংশকে তিনি বলেন, ‘‘ঘরে বসে রাজনীতি হয় না। রাজনীতি করতে হবে রাস্তায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন