বঞ্চিত ও পুরনোতেই জোর দিলেন মমতা

পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলে ‘বিক্ষুব্ধ’দের সংখ্যা যাতে না বাড়ে এবং কোনও ভাবে বিক্ষুব্ধ হয়ে পুরনো কর্মীরা অন্য দলে চলে না যান, তার জন্য বারবারই দলীয় নেতৃত্বকে সতর্ক করছেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

—ফাইল চিত্র।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের পুরনো কর্মীদেরই প্রধানত মনোনয়ন দিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও যদি সব ‘পুরনো বঞ্চিতদের’ টিকিট দেওয়া না যায়, তাঁদের কিছু না কিছু ব্যবস্থা নিজেই করবেন বলেও জানিয়েছেন দলনেত্রী।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলে ‘বিক্ষুব্ধ’দের সংখ্যা যাতে না বাড়ে এবং কোনও ভাবে বিক্ষুব্ধ হয়ে পুরনো কর্মীরা অন্য দলে চলে না যান, তার জন্য বারবারই দলীয় নেতৃত্বকে সতর্ক করছেন মমতা। প্রার্থী বাছাইয়ে কোনও নেতার পছন্দ-অপছন্দ তিনি যে মেনে নেবেন না, তা মনে করিয়ে দিতেই শুক্রবার দলীয় বৈঠকে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘দল প্রার্থী ঠিক করবে। দলের ভাল ও বৃহত্তর স্বার্থ দেখে প্রার্থী বাছতে হবে। এবং সেখানে রেষারেষি যেন না থাকে। আমি এলাকার নেতা বা জেলার নেতা, আমার কথা মেনে চলতে হবে এমনটা হবে না। দলের প্রার্থীর পাশে থেকেই পঞ্চায়েতে সবাই মিলে ভোট করতে হবে।’’

বেশ কিছুদিন ধরেই দলের পুরনো ও নিস্ক্রিয় কর্মীদের ‘সক্রিয়’ করে তুলতে পরামর্শ দিচ্ছিলেন মমতা। বিশেষত দলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি মুকুল রায় বিজেপিতে চলে যাওয়ার পর থেকে পুরনোদের ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা। এ বার ভোটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে দলের গোষ্ঠীকোন্দল ধুয়েমুছে ঐক্যবদ্ধ চেহারা দিতে তাঁর নির্দেশ ‘‘দল সবার ঊর্ধ্বে। কোনও ব্যক্তির কথামতো দল চলবে না। ফলে কেউ যেন ঠিকা না নেয় যে ওকে আমি টিকিট দেব না। ওকে আমি টিকিট দেব। মানুষের আবেগ ও মতামতকেই অগ্রাধিকার দিতে হবে।’’

Advertisement

তা সত্ত্বেও বিক্ষুব্ধ হয়ে দলের এমনকী বিরোধী সিপিএমেরও কেউ বিজেপিতে চলে গেলে তাদের ফের তৃণমূলে ফিরিয়ে আনার দিকেও নজর দিতে বলেছেন মমতা। তাঁর সতর্কবার্তা, ‘‘প়ঞ্চায়েতে রেষারেষি করতে গিয়ে একটা, দুটো দানব যদি ঢুকে পড়ে, তা হলেই জ্বালিয়ে দেবে। ফলে দলের প্রার্থীর পাশে থাকতে হবে। কেউ প্রতিকূলতা তৈরির চেষ্টা করবে না।’’ এর পরেও কোনও অভিযোগ থাকলে তা দলের জেলা পর্যবেক্ষকদের কাছে লিখিত ভাবে জানাতে হবে। এবং বঞ্চিতদের তালিকা তৈরি করে তিনি নিজেই তাদের পুনর্বাসনের বন্দোবস্ত করে দেবেন বলে ভরসা দিয়েছেন।

দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফাঁকতালে বিজেপি ‘টাকা ছড়িয়ে’ ফায়দা লুঠতে পারে বলেও আশঙ্কা তৃণমূলনেত্রীর। সেই সুযোগ কোনওভাবেই যাতে বিজেপি না পায়, সে জন্যই ব্লক স্তর থেকে কর্মীদের আর বেশি সচেতন ও ঐক্যবদ্ধ হতে পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। এবং এই ত্রিস্তর পঞ্চায়েতই যে উন্নয়নের মূল স্তম্ভ, তা কর্মী-নেতাদের বোঝাতে রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলির বিশদ তথ্য দেন নেত্রী। বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতগুলোর মাধ্যমেই পরিষেবা দিই। প়ঞ্চায়েতগুলো হাতে না থাকলে পরিষেবা দিতে পারব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন