বুধবার ঝাড়গ্রাম শহরে পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
প্রায় ছ’মাস পরে ঝা়ড়গ্রামে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত ভোটের পর এই প্রথম।
পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহলে ফল তুলনায় ভাল হয়নি শাসক দলের। কিছু জায়গায় বিজেপি এবং কিছু জায়গায় আদিবাসী সমন্বয় মঞ্চের প্রার্থীদের কাছে হেরেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। বেগ দিয়েছে নির্দল কাঁটাও। কী সমস্যা, কোথায় গলদ তা নিয়ে ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। দলের অন্দরে নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়েছে। আমূল বদল হয়েছে প্রশাসনেও। এই পরিস্থিতিতে আজ, বৃহস্পতিবার আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বুধবারই ঝাড়গ্রাম পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ অরণ্যশহরে পৌঁছন তিনি। থাকছেন রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লক্সে।
উপলক্ষ আদিবাসী দিবসের পাশাপাশি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫ বছর উদযাপন। আক্ষরিক অর্থেই ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামের মঞ্চ প্রস্তুত। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে ১ লক্ষ ৫৬ হাজার বর্গ ফুট এলাকা জুড়ে তিনটি অ্যালুমিনিয়াম হ্যাঙ্গার সেট দিয়ে সভাস্থল তৈরি করা হয়েছে। সেখানে দর্শকাসনে পঞ্চাশ হাজার মানুষ বসতে পারবেন। মুখ্যমন্ত্রীর মূল মঞ্চটি হয়েছে ১৬০০ বর্গ ফুটের। সভাস্থলে আদিবাসী লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান প্রদর্শনের মঞ্চ থাকছে। থাকছে বিভিন্ন সরকারি স্টল।
এ ছাড়া থাকছে আদিবাসী সংস্কৃতি ও লোকজীবনের প্রদর্শনী। আজ, অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন রুটে ২৪টি সরকারি বাস-পরিষেবা চালু সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করবেন। সভা চলাকালীন বৃষ্টি হলে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য সভাস্থলের দু’পাশে অত্যাধুনিক পাইপ বসিয়ে জল নিকাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সভাস্থলে নজরদারির জন্য রয়েছে আটশোটি সিসিটিভি ক্যামেরা।
ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতা যজ্ঞেশ্বর হেমব্রম বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য যে টাকা খরচ হচ্ছে তা আদিবাসী উন্নয়নে খরচ হলে অনেক গরিব মানুষের উপকার হতো।” ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের এক নেতা অবশ্য বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলকে উন্নয়নে ভরিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসন কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়।
এ দিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত উচ্চশিক্ষা দফতরের একটি বিজ্ঞাপনে প্রস্তাবিত ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কলাবিভাগে অলচিকি ভাষা শিক্ষা’ চালু করার কথা বলা হয়েছে। অথচ সাঁওতালি ভাষার লিপি হল অলচিকি। অলচিকি কোনও ভাষা নয়। এমনই অভিযোগ তুলে বেশ কিছু দাবিতে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের সদস্যরা বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান।