গুরুঙ্গহীন পাহাড়ে স্বমহিমায় ‘ফিরলেন’ ঘিসিঙ্গ

রোহিণী রোডের উপরে দাঁড়িয়ে সেই রাস্তার নামকরণ করলেন সুবাস ঘিসিঙ্গের নামে। আর সেই সভায় হাজির জনতা চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘মমতা জিন্দাবাদ, সুবাস ঘিসিঙ্গ জিন্দাবাদ’। সুকনা থেকে জিএনএলএফের সমর্থকদের হাতে হাতে ফিরছিল ঘিসিঙ্গের ছবি, দলের পতাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫১
Share:

উল্লাস: মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথে জিএনএলএফ সমর্থকরা। মঙ্গলবার। ছবি: স্বরূপ সরকার

এক দশক আগের কথা। ষষ্ঠ তফসিল নিয়ে দাবিদাওয়া পেশের পরে দিল্লি থেকে পাহাড়ে ফিরছিলেন সুবাস ঘিসিঙ্গ। তাঁর পথ আটকে দেন বিমল গুরুঙ্গ। শেষ জীবনে অনেক কাঠখড় পোড়ানোর পরে সুবাস দার্জিলিঙে পৌঁছতে পেরেছিলেন ঠিকই। কিন্তু তত দিনে তাঁর নাম-নিশান মেটাতে বহু ফলক উপড়ে ফেলা হয়েছে। পোড়ানো হয়েছে তাঁর শখের রোহিণী ট্যুরিস্ট লজ। পাহাড় তখন বিমল গুরুঙ্গের।

Advertisement

মঙ্গলবার যেন সময়ের চাকাটা ঘুরিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোহিণী রোডের উপরে দাঁড়িয়ে সেই রাস্তার নামকরণ করলেন সুবাস ঘিসিঙ্গের নামে। আর সেই সভায় হাজির জনতা চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘মমতা জিন্দাবাদ, সুবাস ঘিসিঙ্গ জিন্দাবাদ’। সুকনা থেকে জিএনএলএফের সমর্থকদের হাতে হাতে ফিরছিল ঘিসিঙ্গের ছবি, দলের পতাকা। রোহিণী, এমনকী দার্জিলিঙেও রাস্তার পাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের হাতে সেই ছবি-পতাকা দেখা গিয়েছে। রোহিণীর সভায় হাজির এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘এত দিন পরে হঠাৎ যেন সুবাস ঘিসিঙ্গ জীবন্ত হয়ে উঠেছেন!’’

কিন্তু হঠাৎ জিএনএলএফের প্রয়াত নেতাকে এতটা প্রাসঙ্গিক করার প্রয়োজন কেন হল? পাহাড়ের একাংশের বক্তব্য, সুবাস ঘিসিঙ্গই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে প্রথম আন্দোলন করেছিলেন। তাই চিরকালই পাহাড়ে তাঁর গুরুত্ব যথেষ্ট। তা ছাড়া তিনি এবং বিমল গুরুঙ্গ পাহাড়ে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছিলেন এক সময়ে। তাঁদের সঙ্গে এখনকার নেতাদের তুলনা টানতে চাইছেন না পাহাড়ের অনেকেই। তাই গুরুঙ্গহীন পাহাড়ে সুবাসের ভাবমূর্তিকেও কাজে লাগাতে চাইছে শাসকদল। অন্য আর একটি পক্ষের দাবি, মন ঘিসিঙ্গরা যে হেতু জিটিএ-তে যোগ দিতে চাননি, তাই তাঁদের খুশি রাখতেই রাস্তার নাম বদলানো হয়েছে। এর ফলে পাহাড়ের মূল শক্তিগুলি একসঙ্গেই থাকবে।

Advertisement

মমতাও এ দিন বলেন, ‘‘যা যা লাগবে, সব আমি আস্তে আস্তে করে দেব। তবে আপনাদের মিলেমিশে চালাতে হবে। আমরা ভাগ নিতে আসব না।’’ ঘিসিঙ্গের জনপ্রিয়তা কিছুটা ফিরছে, সেটা আঁচ করে বিনয় বলেন, ‘‘সুবাস ঘিসিঙ্গ আমার রাজনৈতিক গুরু।’’ এ কথা শোনার পরে পাশে দাঁড়ানো মন মুচকি হেসেছেন। একদা তাঁর বাবাকে ঢুকতে যাঁরা বাধা দিয়েছিলেন, সে সারিতে প্রথম দিকে ছিলেন বিনয়। হয়তো সে কথা মনে পড়ে গেল তাঁর!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন