ফাইল চিত্র।
বর্ধমানের ‘চমকানি’র জবাব দিল বুনিয়াদপুর!
বর্ধমানে দলীয় সভা থেকে মঙ্গলবার বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় হঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন, চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের জেলে পাঠাতে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুরের বুনিয়াদপুর থেকে বুধবার তার জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পাল্টা হুমকি, ‘‘আমাকে ধমকানি, চমকানি দিয়ে জেলে পাঠাবো বলে ভয় দেখিয়ে কোনও লাভ হবে না। আই ডোন্ট কেয়ার, আই ডোন্ট মাইন্ড! মানুষই এর জবাব দেবে।’’
দিল্লি থেকে আসা বিজেপি নেতাদের নিয়ে সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, কয়েকটি লোক এসে রাজ্যে জুড়ে বসেছে। তারা না জানে বাংলা, না জানে বাংলার সংস্কৃতি! এদের থেকে জনতাকে সাবধান হতে বলেছেন তিনি। মমতার সংযোজন, ‘‘আমাকে বিজেপি কেন, তাদের পিতামহেরা এলেও কিছু করতে পারবে না। আমার স্ট্রাগলের জীবন। চমকে ধমকে কিছু হবে না!’’
বিজেপি নেতারা মনে করছেন, তাঁরা ঠিক জায়গায় ঘা দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়াতেই তা মালুম হচ্ছে। বর্ধমান থেকে কৈলাস নারদ-অভিযুক্ত মন্ত্রীদের পদত্যাদের দাবি জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের না সরালে রাজ্যের মানুষই তাঁদের ‘বাইরে’ পাঠিয়ে দেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন ওই বিজেপি নেতা। বুনিয়াদপুর থেকে মমতা তাঁকে আক্রমণ করেছেন শুনে তিনি বলেন, ‘‘দিদি যে ভয় পেয়েছেন, তা তাঁর কথায় স্পষ্ট। আমরা কেউ তাঁকে ধমকাচ্ছি না। কিন্তু বাংলার মানুষ তাঁকে এ বার ধমকাবেন! দিদি তৈরি হোন!’’ কংগ্রেস ও বাম নেতারা কৈলাস-মমতার তরজায় অন্য গন্ধ পাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর নাম টেনে এনে তৃণমূলের অভিযুক্ত নেতাদের গ্রেফতারের কথা বলে কৈলাস আসলে মমতার হাতেই অস্ত্র তুলে দেন। কেন্দ্রের শাসক দল সিবিআই-কে রাজনৈতিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে, মমতার এই অভিযোগ মান্যতা পেয়েছে কৈলাসের মন্তব্যে। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কথায়, ‘‘এই জন্যই আমরা বলি, বিজেপি-তৃণমূলে গড়াপেটা আছে!’’
আরও পড়ুন:অমিতকে পাত পেড়ে ভাত খাইয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন রাজু-গীতা
সিবিআই ছাড়াও বিজেপি যে ভাবে বাংলায় হিন্দুত্বের কর্মসূচি নিয়ে এগোচ্ছে, তারও সমালোচনা করেছেন মমতা। ‘হিন্দুত্বের’ একটেচিয়া অধিকার যে বিজেপি-র নয়, সে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যখন রামকৃষ্ণদেব জন্মেছিলেন, এমনকী, রাম-রাবণ জন্ম নিয়েছিলেন, তখন বিজেপি কোথায় ছিল?’’ পরক্ষণেই তৃণমূলের সব ধর্মের প্রতি মনোভাব যে একই, তা বোঝান তিনি। মমতা বলেন, ‘‘আমরা মা দুর্গা, চামুণ্ডা, ভবতারিণী, সন্তোষী মায়ের পুজো করি। আবার রমজান মাসে সামিল হই, বড়দিনে কেক কাটি। গুরুদ্বারে হালুয়া খাই।’’ কেদারনাথের দ্বারোঘাটনে যে ভাবে বাবা রামদেব নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাষ্ট্রঋষি’ বলে উল্লেখ করেছেন, তা নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মহাঋষি এসেছে দেশে! কত বাণী দিচ্ছে।’’