পুজো: গঙ্গাসাগরে কপিল মুনির আশ্রমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
যোগী আদিত্যনাথকে যেন চ্যালেঞ্জই করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আকার-আয়তনে ফারাক অনেক। রঙে-রসদেও ফারাক আছে। তবে পৌষ সংক্রান্তির পূণ্যস্নান নিয়ে আয়োজনের উদ্যোগ দু’জনকে যেন এক বন্ধনীতে ফেলে দিয়েছে। প্রশাসনিক কর্মসূচি নিয়ে বুধবারই সাগরে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ইলাহাবাদের কুম্ভ মেলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘সাগরমেলার পুণ্যার্থীদের জলপথে আসতে হয়। কুম্ভয় সড়কপথে যোগাযোগ আছে। আমরা তো তাই বলি কুম্ভ থেকে কোনও অংশে আমরা পিছিয়ে নেই।’’
লোকসভা ভোটের বছরে কুম্ভ মেলার পুণ্যার্থীদের জন্য এ বার বাড়তি আয়োজন করছে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। এখানে সাগর মেলার জন্য খামতি রাখছে না রাজ্যও। মমতা-সরকারের এই ‘উত্তরণে’ অবশ্য সেই রাজনৈতিক অঙ্কই দেখছেন অনেকে। মমতা-বিরোধী প্রচারে গেরুয়া শিবিরের মূল অস্ত্র ‘সংখ্যালঘু তোষণ’-এর মোকাবিলায় নবান্ন সফল বলেই মত তাদের। এ দিন দুপুরে সাগরে পৌঁছে বিকেলে কপিলমুনির আশ্রমে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর ডালা দিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা কাটান সেখানে। দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন আশ্রমের প্রধান মহন্ত জ্ঞানদাসের সঙ্গে। মহন্তও কুম্ভ নিয়ে প্রচারের বাড়াবাড়ির কথা বলে এই প্রতিযোগিতাই উস্কে দিয়েছেন।
এই কাজে এখন সর্বশক্তি নিয়ে পড়ে আছে রাজ্য সরকারের সব গুরুত্বপূর্ণ দফতরই। তৃণমূল পরিচালিত সাগর পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদও সাধ্যমতো পরিষেবার কাজের অংশীদার। সাগরের বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা মনে করেন ‘‘সাগরের সঙ্গে কুম্ভ মেলার তুলনা করা যেতেই পারে।’’
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেন্দ্রনাথ খাঁড়ার কথায়, ‘‘এত মানুষের প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা করা পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমরা সরকারি দফতরগুলির সঙ্গে সহযোগিতায় থাকি।’’ তাঁদের দাবি, গত বছরের মেলায় ২২ লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। এ বার তা ২৫ লক্ষ ছাপিয়ে যাবে। গঙ্গাসাগরের এই জমায়েতের সম্ভাবনায় দল ও সরকারের প্রচারের প্রস্তুতি সেরে রেখেছে শাসক শিবির। কচুবেড়িয়া থেকে দীর্ঘ রাস্তায় তৃণমূলের পতাকা। মেলা মাঠের চারদিকে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, গতিধারার মতো প্রকল্পটিগুলির বিবরণ সহ অসংখ্য ফ্লেক্স।