তাঁর স্বপ্নের তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্পে ভাবাদিঘি-জট কাটাতে এ বার তৎপর হলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। থমকে থাকা প্রকল্পের কাজে বাধা না-দেওয়ার আবেদন জানানোর পাশাপাশি তিনি প্রত্যয়ের সুরে ঘোষণা করেছেন, ওই প্রকল্পের কাজ হবে। প্রয়োজনে ওই দিঘির দ্বিগুণ মাপের জমি কেটে দিঘি বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু ভাবাদিঘির আন্দোলনকারীরা তাঁদের অবস্থানে অনড়।
বুধবার বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, ‘‘দয়া করে এই প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে বাংলার শ্বাস আটকে দেবেন না। ওই রেলপথ নিয়ে কোনও আপস করব না। কামারপুকুর ঠাকুরের জন্মস্থান। জয়রামবাটি সারদা মায়ের। যা চাইবেন করে দেব। কিন্তু যদি বলেন হবে না, তা হলে বলব হবে। কাজ বন্ধ করা যাবে না।’’
২০০১-এ রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ প্রকল্পের শিলান্যাস করেন মমতা। এখন হাওড়া থেকে গোঘাট পর্যন্ত এবং উল্টো দিকে বিষ্ণুপুর থেকে ময়নাপুর পর্যন্ত ট্রেন চলছে। কামারপুকুর পর্যন্ত রেলের মাটি ফেলার কাজ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জট পেকেছে গোঘাটের ভাবাদিঘিকে ঘিরে। রেল প্রায় ৫২ বিঘার ওই দিঘির উত্তর দিকের একাংশ বুজিয়ে রেলপথ পাততে চায়। কিন্তু পরিবেশ এবং জীবিকার প্রশ্নে আপত্তি তুলেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা চান, দিঘির উত্তর দিকের জমি দিয়ে রেলপথ হোক। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর কথা শোনার পরেও ‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র পক্ষে স্বপন রায় তাঁদের অবস্থানের কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিরীহ মানুষের স্বপ্ন ভেঙে দিয়ে নিPrজের স্বপ্নপূরণ করতে দলের লোকদের লেলিয়ে দিচ্ছেন। আদালতে এ নিয়ে মামলার নিষ্পত্তির আগেই আমাদের উপরে জুলুম হচ্ছে।’’ একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বললেও দিঘি বুজিয়ে রেলপথ করতে দেব না।’’
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য দাবির পিছনে যুক্তি থাকলে বিবেচনা করার কথা বলেছেন। গ্রামবাসীদের তিন-চার জনকে দেখাও করতে বলেছেন। কিন্তু প্রকল্পের কাজে ব্যাঘাত যে না-পসন্দ, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি।