ফের বিজেপিকে ভারত ছাড়া করার ডাক মুখ্যমন্ত্রীর

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে সেই ঘোষণা আগেই হয়েছিল। মেদিনীপুরে তৃণমূল নেত্রী আওয়াজ তুললেন: ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’। বললেন, ‘‘আর নেই দরকার, নোটবন্দির সরকার, জিএসটির সরকার, মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করার সরকার।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪৩
Share:

আহ্বান: মেদিনীপুরের সভা থেকে বিজেপিকে ভারত ছাড়ার ডাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।

বিজেপির সঙ্গে দম্ভের লড়াইয়ে গুজরাতে রাজ্যসভার আসন জিতে নিয়েছেন কংগ্রেসের আহমেদ পটেল। সদ্য শেষ হওয়া কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা থেকে রাষ্ট্রপতি-উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পর পর ধাক্কা খাওয়া বিরোধী দলগুলির কাছে যদিও চূড়ান্ত যুদ্ধ জেতা এখনও বেশ কঠিন। এ বার সেই চ্যালেঞ্জ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫ বর্ষ পূর্তিতে মেদিনীপুরের মাটি থেকে বুধবার মমতা ডাক দিলেন বিজেপি-কে ভারত ছাড়া করার।

Advertisement

২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে সেই ঘোষণা আগেই হয়েছিল। মেদিনীপুরে তৃণমূল নেত্রী আওয়াজ তুললেন: ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’। বললেন, ‘‘আর নেই দরকার, নোটবন্দির সরকার, জিএসটির সরকার, মানুষে মানুষে ভাগাভাগি করার সরকার।” নোট বাতিল থেকে জিএসটি, আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করার মতো একাধিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘‘শবদাহ থেকে সাজুগুজু— সবেতেই বলছে আধার চাই। এ কোন আঁধারে আছি আমরা?’’

এখানেই শেষ নয় বিজেপির বিরুদ্ধে এই লড়াই তিনি যে সারা দেশে ছড়িয়ে দেবেন, সে কথাও জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী। আজ, বৃহস্পতিবারই বিরোধী দলগুলির সঙ্গে বৈঠক করতে দিল্লি যাবেন তিনি। অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীর বিজয়রথ যে ভাবে গুজরাতে ধাক্কা খেয়েছে তা থেকে ফায়দা তুলতে কৌশল রচনা হবে সেখানে।

Advertisement

আরও পড়ুন:মোদী-মুক্ত রাখা হলো ডিএম-দের

দিল্লি থেকে ফিরেই মমতা যাবেন বিহার ও ঝাড়খণ্ডে। ২৭ অগস্ট বিহার ও ৩১ অগস্ট ঝাড়খণ্ডে যাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ঝাড়খণ্ডে যাচ্ছি। ওখানে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিহারেও লালুজির কর্মসূচিতে থাকব।”

মমতার এই লড়াইকে কুর্নিশ করেছেন কংগ্রেস নেত্রী মীরা কুমার। বুধবার মহাজাতি সদনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রুখে দাঁড়াচ্ছেন। কংগ্রেসও প্রতিবাদ করতে, রুখে দাঁড়াতে প্রস্তুত। তবে শুধু বাংলা কেন, গোটা দেশেই যারা বিষ ঢালার চেষ্টা করবে, সাম্প্রদায়িকতার প্রাচীর তোলার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা সবাই মিলে প্রতিবাদ করব।’’

যদিও লালুপ্রসাদের জনসভায় কেন যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চর্চা করছেন কেউ কেউ। কিন্তু মমতা মনে করেন, দেশে এখন সুপার ইমার্জেন্সি চলছে। বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বললেই কেন্দ্রীয় সরকার তাদের হাতে থাকা এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের চমকাচ্ছে, জেলে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে। বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ খুললেই নেতাদের দাগিয়ে দেওয়ার কৌশলের দিকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়তে চান মমতা।

তৃণমূলনেত্রী মনে করেন, বিভেদ পাশে সরিয়ে রেখে সব আঞ্চলিক দলকে এখন এক ছাতার তলায় আসতে হবে। বিজেপি বিরোধী এই অক্ষে তিনি স বকিছু ভুলে আসার জন্য অন্য আঞ্চলিক দলগুলিকেও আহ্বান জানিয়েছেন।

মমতা এ দিন মেদিনীপুরে আরও বলেন, “এটা রাজনৈতিক লড়াই। সংঘাতটা আদর্শের, দর্শনের। গুজরাতে সারা রাত ধরে গণতন্ত্র বনাম একনায়কতন্ত্রের লড়াই হয়েছে। শেষমেশ গণতন্ত্রেরই জয় হয়েছে। এটাই ভারতবর্ষের সব থেকে বড় শক্তি।” যদিও বিরোধীরা যে নেতার ‘একনায়কতন্ত্র’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সরব, সেই নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে এ দিন একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি মমতা। এখন তাঁর আপ্তবাক্য, ‘বিজেপি ভারত ছাড়ো’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন