বুদ্ধবাবু ‘পরিবারের এক জন’, মন্তব্য মমতার

দিনতিনেক আগে আলিমুদ্দিনে দলীয় দফতরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বুদ্ধবাবু। নাক-মুখ দিয়ে রক্তপাত হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বুদ্ধবাবু রাজি হননি। নবান্ন থেকে বেরিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আচমকা পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে হাজির হয়ে মমতাও বুদ্ধবাবুকে একই অনুরোধ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৪:০১
Share:

ছবি: সংগৃহীত

অসুস্থতার খবর পেয়েই বাড়িতে ফোন করে খবর নিয়েছিলেন। এ বার সশরীর প্রাক্তনের বাড়িতে হাজির হয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে যাবতীয় সহায়তার কথা বলে এলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতিতে বিপরীত মেরুর বাসিন্দা হয়েও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চলে যাওয়াকে সৌজন্যের নতুন নজির হিসাবেই দেখা হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মুকুলকে দলেই নিচ্ছে বিজেপি

দিনতিনেক আগে আলিমুদ্দিনে দলীয় দফতরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বুদ্ধবাবু। নাক-মুখ দিয়ে রক্তপাত হওয়ায় দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বুদ্ধবাবু রাজি হননি। নবান্ন থেকে বেরিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় আচমকা পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে হাজির হয়ে মমতাও বুদ্ধবাবুকে একই অনুরোধ করেছেন। বুদ্ধবাবুও পাল্টা ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই সঙ্গেই বলেছেন, তাঁর চিকিৎসকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি কথা বলবেন। প্রসঙ্গত, দু’দিন আগের তুলনায় বুদ্ধবাবুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। কিছু দিন যাবৎ পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গেই থাকত তাঁর। এখনও প্রয়োজন মনে হলেই অক্সিজেন চলছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে বেরিয়ে এ দিন পাম অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছে প্রথমে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে ভিতরে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বেরিয়ে এসে বুদ্ধ-জায়া মীরা ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে ভিতরে ডেকে নেন। বর্তমানকে ঘরে দেখে প্রাক্তন বলেন, বাড়িতে আসার জন্য ধন্যবাদ! বর্তমান পাল্টা বলেন, ধন্যবাদের কোনও ব্যাপার নেই! বুদ্ধবাবুকে তিনি ‘পরিবারের এক জন’ বলেই মনে করেন। তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে মমতা জানান, এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্ত করা আছে। বুদ্ধবাবু অবশ্য বলেন, তিনি এখন ঠিক আছেন। বাড়িই তাঁর পক্ষে ভাল। মমতা তখন বলেন, বাড়িতেও চিকিৎসার জন্য যা যা আয়োজন করা সম্ভব, করে দেওয়া হবে। সরকার কোনও ব্যবস্থা করলে তিনি যেন ‘দয়া করে ফিরিয়ে’ না দেন, সেই আর্জিও বুদ্ধবাবুকে জানান তিনি। প্রত্যুত্তরে হেসে বর্তমানকে আবার ধন্যবাদ জানান প্রাক্তন।

চিকিৎসা সংক্রান্ত কথাবার্তার পরে মীরাদেবীর সঙ্গে কথা হয় মমতার। মীরাদেবী মুখ্যমন্ত্রীকে চা খাওয়াতে চেয়েছিলেন। হঠাৎ করে তিনি চলে যাওয়ায় মীরাদেবীরা যে অপ্রস্তুত, বুঝতে পারছিলেন মমতাও। তিনিই বলেন, এখন চা খাওয়ার সময় নয়। আগে বুদ্ধবাবুকে সুস্থ করে তুলুন। পরে এক দিন এসে না হয় চা খাওয়া যাবে! বুদ্ধবাবুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। উনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। সব রকম সহায়তা আমরা করতে চাই, যতটা উনি নেবেন। বাড়িতে থেকেও যাতে সব রকম চিকিৎসা হয়, সেটা আমরা দেখব।’’

বুদ্ধবাবুর দলকে হারিয়ে রাজ্যে পরিবর্তন ঘটানোর পরেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ অনুষ্ঠানে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা। তাঁর তরফে সে বার পার্থ চট্টোপাধ্যায় গিয়েছিলেন বুদ্ধবাবুর বাড়ি। সৌজন্যে সাড়া দিয়ে বুদ্ধবাবুও হাজির হয়েছিলেন রাজভবনে। সেই সৌজন্যেরই নতুন ধাপ রচনা হল এ দিন সন্ধ্যায়। মমতার মাধ্যমেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন