ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট বিলকে শক্তিশালী করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য

আলাদা করে কোনও নিয়ন্ত্রণ কমিশন নয়, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনেই চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের বিচারপতিকে মাথায় রেখে কমিশন গড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০৪:০৯
Share:

ফাইল চিত্র।

আলাদা করে কোনও নিয়ন্ত্রণ কমিশন নয়, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনেই চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের বিচারপতিকে মাথায় রেখে কমিশন গড়ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ওই কমিশনকে ঠুঁটো করে না রেখে তার হাতে দেওয়ানি আদালতের বেশ কিছু ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। আগামী ৩ মার্চ বিধানসভায় নতুন মোড়কে ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট বিলটি পেশ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘এমন কড়া আইন হচ্ছে যে বেসরকারি স্বাস্থ্য কারবারিরা এ বার সমঝে চলবেনই!’’

এত দিন বেসরকারি নার্সিংহোম-হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তা বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কাছে যেত। অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলা জজের পদমর্যাদার কেউ এর মাথায় থাকতেন। নতুন আইনে ট্রাইব্যুনােলর বদলে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন তৈরি করা হবে। কমিশনের ক্ষমতা হবে দেওয়ানি আদালতের সমতুল্য।

Advertisement

২০০৫ সালের ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট বিলের সংশোধনী ২০১০ সালে বিধানসভায় পেশ করা হলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। এ বার নতুন বিলে জরিমানার পরিমাণ যেমন অনেকটা বাড়ানো হচ্ছে তেমনই, বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমের উপরে নানা বিধিনিষেধ চাপছে বলে স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর।

এক শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্তা বলেন, ‘‘গত ক’বছরে সুপ্রিম কোর্ট চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে বৈঠকেরও নানা প্রসঙ্গ উঠেছে। সেগুলিকে মাথায় রেখেই বিলে নতুন কিছু ধারা যোগ করা হয়েছে।’’

চলতি আইনে চিকিৎসা গাফিলতিতে মৃতের পরিবারকে সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর ক্ষতিগ্রস্তদের ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা। লাইসেন্সের শর্ত পূরণ না হলে জরিমানা ৫০ হাজার টাকা। নতুন বিলে কমিশনের হাতে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করার ক্ষমতা দেওয়া হবে। গাফিলতিতে মৃত্যুর জন্য ২ কোটি টাকা, গুরুতর জখম হলে ১ কোটি ক্ষতিপূরণের প্রস্তাবও রয়েছে।

নয়া আইনে চিকিৎসা না করে রোগী ফেরাতে পারবে না বেসরকারি হাসপাতাল। জরুরি বিভাগে কোনও রোগী এলে বিনা পয়সায় ন্যূনতম চিকিৎসা দেওয়ার কথাও বলা থাকবে। অর্থাৎ রোগী এলে তাঁকে ন্যূনতম কী কী পরিষেবা বেসরকারি হাসপাতাল দিতে বাধ্য, তা বিধিতে স্পষ্ট করা হবে।

বকেয়া না পেলে মৃতদেহ না ছাড়া বা রোগী অন্যত্র নিয়ে যাওয়া আটকানো যাবে না। সরকারের লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতাও বাড়ানো হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে জমা পড়া অভিযোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে চেপে রাখেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ। সেই ব্যবস্থা বদলাতে বিশেষ সেল গঠনের কথা বলা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন