দলের লোককেও রেয়াত নয়, জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ফের সরব মমতা

চলতি বছরেই উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:১৪
Share:

আলোচনা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, ভোরের আলোর উদ্বোধনী মঞ্চে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

গজলডোবাতেও এ বার জমি মাফিয়াদের ছায়া দেখছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার গজলডোবাতে পর্যটন হাব ‘ভোরের আলো’ উদ্বোধন করে সেই আশঙ্কার কথা নিজেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিস্তা ব্যারাজের পাশে ওই এলাকার বর্তমান ভৌগোলিক পরিস্থিতি ভিডিয়ো তুলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সব ভিডিয়ো তুলে রাখতে হবে। এর পর এখানে কোটি কোটি টাকা লগ্নি হবে। সেই আশায় অনেক মাফিয়া ঘুরঘুর করবে। সে আমার পার্টির হলেও ছাড়বেন না।”

Advertisement

চলতি বছরেই উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন। তারপরে সন্দেহভাজন অন্তত ৫০ জন গ্রেফতার হন। যাঁদের মধ্যে তৃণমূলের এলাকার নেতা হিম্মত সিংহ চৌহানও রয়েছেন। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নিজের ‘পার্টির কেউ’ জড়িত থাকার কথাও উল্লেখ করেছেন। পুলিশের কেউ জড়িত থাকলেও পার পাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা উত্তরবঙ্গের এক জেলার তৃণমূল নেতার কথায়, “দিদির কানে যায় না এমন কোনও ঘটনা নেই। দলের কোন নেতা গজলডোবার আশেপাশে জমি নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, জমি কিনে রেখেছেন এবং জমি কিনতে চাইছেন সব খবরই পৌঁছেছে। সে কারণেই বার্তা দিয়ে রাখলেন।”

Advertisement

আপাতত যা পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে গজলডোবায় প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা শুনিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। গজলডোবাতে এ দিন ভোরের আলো প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। সরকারি অতিথি নিবাস তৈরি হয়েছে। গলফ কোর্সও রয়েছে পর্যটন হাবে। সে সবের উদ্বোধন হয়েছে এ দিন। সাইকেল রাইড থেকে শুরু করে নতুন ভাবে নৌকো বিহারও শুরু হচ্ছে এ দিন থেকে।

এ দিন মঞ্চে হর্ষ নেওটিয়া-সহ একাধিক ব্যবসায়ীও ছিলেন। তাঁদেরও অনেকে গজলডোবায় নতুন করে বিনিয়োগ করতে পারেন বলে আশা করছে রাজ্য সরকার। পুরো এলাকার সম্ভাবনা নিয়ে এ দিন একটি ভিডিয়ো তথ্যচিত্র দেখিয়েছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র এবং পর্যটন সচিব অত্রি ভট্টাচার্য। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কলকাতার ইকো সিটির মতোই ভোরের আলোও আর্ন্তজাতিক খ্যাতি পাবে। তখন জমির দাম দ্রুত বাড়বে, মত তাঁর।

গজলডোবায় যাতে প্রশাসনিক নজরদারি আরও নিবিড় হতে পারে সে কারণে গজলডোবাকে মহকুমা ঘোষণা করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। জলপাইগুড়ি সদর মহকুমাশাসকের পক্ষে গজলডোবায় এসে রোজ রোজ তদারকি করা সম্ভব নয়।

মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন, গজলডোবার দায়িত্বে যে অফিসার থাকবেন, তিনি যেন এই এলাকাতেই অফিস করেন। তা হলে কোনও জমি দখল হয়ে যাচ্ছে কি না, তার নজরদারি চলতে পারে। আপাতত পুলিশ ক্যাম্প হলেও পূর্ণাঙ্গ থানাও করা হবে দ্রুত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন