দিদির ধমকে টলমল বাণী

বাণীর বাণেই কাত হয়েছে রানাঘাট-শান্তিপুর! নবান্নে ফেরা নিশ্চিত করেই, শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে জয়ী প্রার্থীদের তলব করেছিলেন দলনেত্রী। আর সেখানেই দিত্বীয়বার ক্ষমতায় পেরার পরে দিদির প্রথম অনুশাসনের কোপে পড়তে চলেছেন নদিয়ার জেলা সভাধিপতি বাণীকুমার রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৬ ০২:৫২
Share:

বাণীকুমার রায়

বাণীর বাণেই কাত হয়েছে রানাঘাট-শান্তিপুর!

Advertisement

নবান্নে ফেরা নিশ্চিত করেই, শুক্রবার কালীঘাটের বাড়িতে জয়ী প্রার্থীদের তলব করেছিলেন দলনেত্রী। আর সেখানেই দিত্বীয়বার ক্ষমতায় পেরার পরে দিদির প্রথম অনুশাসনের কোপে পড়তে চলেছেন নদিয়ার জেলা সভাধিপতি বাণীকুমার রায়।

অভিযোগ, তাঁক ‘কলকাঠি’ নাড়ার সুবাদেই রানাঘাট (উত্তর-পশ্চিম), রানাঘাট (দক্ষিণ) এবং শান্তিপুর কেন্দ্র তিনটি খুইয়েছে দল। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাণীর পরিবর্তে ইতিমধ্যেই সভাধিপতি হিসেবে জেলাপরিষদের শিক্ষা, পূর্ত ও পরিবহণ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দীপক বসুর নামও ঘুরতে সুরু করেছে।

Advertisement

তৃণমূলের নদিয়া জেলার এক নেতা বলছেন, ‘‘নির্বাচনের আগে থেকেই নদিয়ার ওই তিন কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠছিল বাণীদার বিরুদ্ধে। ওঁকে সতর্কও করা হয়েছিল। এ বার হারের পরে বাণীর উপরে তাই খাঁড়ার ঘা পড়তে চলেছে।’’ বাণীবাবুর ঘনিষ্টরা অবশ্য জানাচ্ছেন, দলেরই একাংশ দিদির ‘কান ভারী’ করায়, চটে গিয়েছেন তিনি।

রানাঘাটের ওই কেন্দ্রগুলিতে গোষ্ঠী কোন্দল নতুন নয়। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রানাঘাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রের প্রার্থী আবীররঞ্জন বিশ্বাস এবং রানাঘাট (উত্তর-পূর্ব) কেন্দ্রের প্রার্থী সমীর পোদ্দারের সঙ্গেও তার সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। এই পরিস্থিতিতে রানাঘাট (দক্ষিণ) আর রানাঘাট (উত্তর-পশ্চিম) কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের পরাজয়টা ছিল যেন নিছক সময়ের অপেক্ষা তা দলের জেলা নেতাদের অনেকেরই আশঙ্কা ছিল। দলেরই এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার কথায়, ‘‘দেখুন না, এ বার কি হয়। শুধু বাণীদাই নয়, একে একে অন্য উইকেটও পড়বে।’’

এ দিন বাণীবাবুর বিরুদ্ধে সরাসরি তোপ দাগছেন সমীর। বলছেন, ‘‘জেলা পরিষদের সভাধিপতি বাণী এবং তাঁর কিছু অনুগামনীর জন্য এই তিন বিধানসভায় আমাদের এত খারাপ ফল হয়েছে।’’

সমীরবাবুর মতো সরাসরি নাম ধরে কাউকে কিছু না বললেও, দলের রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের প্রার্থী ও রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান পার্থবাবু বলেন,” গদ্দারী হয়েছে । যার কারনেই এই ফল। “রানাঘাট দক্ষিণের প্রার্থী আবীরবাবু বলেন,” আমাদের দলের একাংশের কারনেই এই ফল হয়েছে।“

সমীরবাবুর মতো সরাসরি নাম হলেও রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের প্রার্থী ও রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান পার্থবাবু বলেন, ‘‘গদ্দারি হয়েছে। যে কারনেই এই ফল।’’ রানাঘাট দক্ষিণের প্রার্থী আবীরবাবু বলেন, ‘‘দলের একাংশের কারনেই এই ফল হয়েছে।’’

দীপক বসু কেন? দলের নেতাদের একাঁশের কথায়, দীপক বসুর সভাধিপতি হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল প্রথমেই। সে বার দলের গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে তার সভাধিপতি হওয়া হয়নি। এ বার সেটা হতে চলেছে বলেই মনে করছেন তারা। ২০১৩ সালে জেলা পরিষদের আসনে দাঁড়িয়ে জয়ী হয়ে কর্মাধ্যক্ষ হন দীপক। সভাধিপতি হওয়ার দৌড়েও ছিলেন। তাছাড়া ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি টানা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির দায়ীত্ব সামলেছেন। তারপর থেকে টানা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক। প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত অনুগামী। দলের কর্মীদের কথায়, ‘‘দাদার একটাই লবি। সেটা মমতা লবি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন