Narendra Modi

পাওনা প্রায় ৫০ হাজার কোটি, বকেয়া চেয়ে মোদীকে চিঠি মমতার

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতা বন্দরের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সে দিন রাজভবনে গিয়ে মোদীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেছিলেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:৫৪
Share:

নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে টাকা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রের কাছে তাদের পাওনা ৪৯ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। বার বার বলেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে সেই টাকা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সময়ে পাওনা না-পাওয়ায় রাজ্য চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে চার পাতার চিঠিতে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীকে তিনি লিখেছেন, ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আপনাকে অনুরোধ করছি। প্রাপ্য টাকা পেলে রাজ্যে আরও উন্নয়ন করব’।

Advertisement

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতা বন্দরের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সে দিন রাজভবনে গিয়ে মোদীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করেছিলেন মমতা। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দিল্লি গিয়ে আলোচনা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সে কথা মুখ্যমন্ত্রীই তখন সাংবাদিকদের জানান। এর পর রাজ্য বাজেট হয়ে গিয়েছে। ২০১৯-’২০ আর্থিক হিসেব দেখে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখতে মনস্থ করেন মমতা।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘ন্যায্য’ দাবি জানিয়ে রাজ্যের জন্য ৫০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছেন মমতা। এর মধ্যে ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষের বাজেটে উল্লিখিত কেন্দ্রীয় করের অংশ হিসেবে প্রাপ্য ১১ হাজার ২১২ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় অনুদান বাবদ পাওনা ৩৬ হাজার কোটি টাকা। জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যের ভাঁড়ারে ২৪০৬ কোটি টাকা আসার কথা। কেন্দ্রীয় প্রাপ্য করের টাকা প্রতি মাসের প্রথম দিনের বদলে কুড়ি তারিখে পাওয়ায় কোষাগারের নগদে টান পড়ছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় অনুদান বাবদ পাওনা ৩৬ হাজার কোটি টাকা দ্রুত বরাদ্দ করার জন্য লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জিএসটি ক্ষতিপূরণের অক্টোবর-নভেম্বরের পাওনা টাকা কেন্দ্র দিয়েছে ফেব্রুয়ারিতে। এই খাতেও রাজ্যের প্রাপ্য ২৪০০ কোটি টাকা।

Advertisement

অর্থ-কর্তাদের কেউ কেউ অবশ্য জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় করের ৪২% রাজ্যের পাওয়ার কথা। ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে কর আদায় কম হওয়ায় রাজ্যের ভাগে টাকাও জুটেছে কম। কেন্দ্রীয় অনুদান বাবদ যে ৩৬ হাজার কোটি টাকা রাজ্যের পাওনা বলে দাবি করা হয়েছে, তার মধ্যে ২৩ হাজার কোটি টাকা বুলবুলের ক্ষতিপূরণ বাবদ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের প্রশ্নে কেন্দ্রের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকায় সে টাকা পাওয়ার আশা কম। তবে জিএসটি ক্ষতিপূরণের দাবি ন্যায্য, দিল্লি তা দিতেও বাধ্য বলে জানাচ্ছেন অর্থ-কর্তারা। নবান্নের এক শীর্ষকর্তার কথায়, ‘‘প্রতি বারই বকেয়া করের টাকা মার্চ মাসের শেষে মেলে। এ বারও যাতে তার অন্যথা না-হয় সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।’’

সম্প্রতি দিল্লির বিধানসভা জিতে কেন্দ্রের সঙ্গে সহযোগিতার রাস্তায় হাঁটতে চেয়েছেন অরবিন্দ কেজরীবাল। শপথগ্রহণের মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রীর আশীর্বাদ চেয়েছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও। ২৮ ফেব্রুয়ারি ভুবনেশ্বরে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন শাহ। সেখানে মমতাও যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সেটা হলে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম বার তিনি পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সমন্বয় বৈঠকে যোগ দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন