অনুপ্রবেশ প্রশ্নে রাজ্যকে দোষ দিয়ে লাভ নেই দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে আজ জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত কেন্দ্রকেই আগলাতে হবে। তারা বরং আরও বেশি গোয়েন্দা তথ্য রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করে নিক।
বর্ধমান বিস্ফোরণের পরে অনুপ্রবেশ প্রশ্নে বিজেপি তথা মোদী সরকারের আক্রমণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, বর্ধমান কাণ্ডের অধিকাংশ চক্রীরা বাংলাদেশের নাগরিক। তিন বছরের তৃণমূল জমানায় এরা ভারতে এসে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে রেশনকার্ড করিয়ে নিজেদের ভারতীয় পরিচয়পত্র বের করে নিয়েছেন।
তাই এই সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের পিছনের রাজ্য সরকার তাদের দায় এড়াতে পারে না।
পাল্টা জবাবে আজ মমতা জানিয়েছেন, “অনেকেই ভুলে যাচ্ছেন, যে সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত টহলদারির দায়িত্ব কেন্দ্রের, রাজ্যের নয়। অনুপ্রবেশ রোধের বিষয়টি তাই মূলত কেন্দ্রের দেখার বিষয়। তাদের বিএসএফ রয়েছে, সশস্ত্র সীমাবল রয়েছে। রয়েছে ‘র’-এর মত গুপ্তচর সংস্থাও।” মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, সীমান্ত রক্ষায় কেন্দ্রীয় বাহিনী যেমন ব্যর্থ হচ্ছে, তেমনই ‘র’ বা কেন্দ্রীয় আইবি-র মতো সংস্থাগুলিও পশ্চিমবঙ্গ সংক্রান্ত কোনও তথ্য রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে না। এতে আখেরে রাজ্য তথা দেশের নিরাপত্তাই বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘনিষ্ঠ মহলে মমতা জানিয়েছেন, তথ্য আদানপ্রদানের এই প্রক্রিয়াকে আরও সরল করা উচিত।
আজ দিনভর সাউথ অ্যাভিনিউ-র বাড়িতেই ছিলেন মমতা। সন্ধ্যায় প্রথমে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আমন্ত্রণ জানান জানুয়ারি মাসে বিশ্ব বঙ্গশিল্প সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য। রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে মমতাকে জানিয়েছেন যে তিনি ওই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন। তার পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। দু’জনের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট কথা হয়। মমতার সঙ্গে ছিলেন মুকুল রায়ও।
খাগড়াগড় পরবর্তী অধ্যায়ে এক বার হুদহুদ সাইক্লোন আসার আগে রাজনাথ ফোন করেছিলেন মমতাকে। তার পরে এই সাক্ষাৎ। এর মধ্যে গত দশ দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রাম দখল নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ চরমে উঠেছে। রাজ্যে টানা সংঘর্ষে উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আজকের বৈঠকে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে সবিস্তার জানতে চান রাজনাথ সিংহ। প্রশ্ন ওঠে খাগড়াগড় নিয়েও। জবাবে মমতাই টেনে এনেছেন অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গ। তদন্তে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রেরও উচিত রাজ্যের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগ করে নেওয়া। অনুপ্রবেশ রুখতেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।