কাছাকাছি: ডুমুরজলা স্টেডিয়ামে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
মেলালেন তিনি মেলালেন! সৌজন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর উষ্ণ করমর্দন, পাশাপাশি বসে পরস্পরের হাসি-মস্করা-কানাকানি কথা। সর্বোপরি দলনেত্রী মমতার ঘোষণা, ‘‘আমার পরে অভিষেক-শুভেন্দুরা আরও ৫০ বছরের প্রজন্ম তৈরি করবে।’’
প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবেই কি দলের অন্দরে বহু জল্পনার নিরসন করতে চাইলেন মমতা? কারণ, শুভেন্দুর সঙ্গে অভিষেকের ‘মধুর’ সম্পর্ক দলে দীর্ঘদিনের আলোচিত বিষয়। অভিষেক যুব সংগঠনের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দলে যে ভাবে ‘দু-নম্বর’ হয়ে উঠে আসছেন, তা শুভেন্দুর মতো কেউ কেউ সুনজরে দেখেন না বলে প্রচার চালু আছে। পাশাপাশি, মুকুল রায় বিজেপিতে যাওয়ার পরে শুভেন্দু সম্পর্কেও অনেক কিছু উড়ে বেড়াচ্ছে। সেই শুভেন্দুকে শুক্রবার দলের মঞ্চে বাড়তি প্রতিষ্ঠা দেওয়া ও অভিষেকের পাশে বসিয়ে ‘সহজ’ সম্পর্কের বার্তা দেওয়া মমতার সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত বলেই অনেকে মনে করছেন। আবার কারও কারও মতে, দু’জনের সম্পর্ক ইদানীং ‘সহজ’ হয়েই এসেছিল। এ দিন তার বহিঃপ্রকাশ ঘটল।
অভিষেক অবশ্য তাঁর বক্তৃতায় শুভেন্দু সম্পর্কে আলাদা করে কিছু বলেননি। শুধু বলেছেন, ‘‘আমাদের দলে এক নম্বর, দু’নম্বর, তিন নম্বর বলে কিছু নেই। সবটাই দলনেত্রী।’’ শুভেন্দুও এই সম্মেলনের জন্য অভিষেককে অভিনন্দন জানানো ছাড়া বাড়তি কিছু বলেননি।
তবু মমতা যে ভাবে দলের আগামী দিনের মুখ হিসেবে অভিষেক ও শুভেন্দুকে এক বন্ধনীতে এনেছেন, তা অনেকেরই নজর কেড়েছে।
মুকুল দল ছাড়ার পর থেকেই শুভেন্দুকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মমতা। ভারতী ঘোষের অপসারণের নেপথ্যে শুভেন্দুর ভূমিকা আছে দলীয় সূত্রের খবর। ভারতী চলে আসার পর জঙ্গলমহলের রাজনীতিতেও শুভেন্দুকে আরও সক্রিয় হতে দেখা যাচ্ছে। দুই মেদিনীপুরে বসানো হয়েছে তাঁরই পছন্দের পুলিশ-কর্তাদের।
আরও পড়ুন: মধ্যমগ্রামে প্রোমোটার খুন, সেলুনে ঢুকে ৮টা গুলি
তাঁকে ফাঁসানো হতে পারে বলে দিন তিনেক আগে সংবাদমাধ্যমে যে বার্তা ছড়িয়েছিলেন ভারতী, সেটার লক্ষ্য শুভেন্দু বলেই অনেকের ধারণা। এ দিন যখন শুভেন্দু-অভিষেক এক মঞ্চে, তখন সিআইডি বাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছিল ভারতী ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের আস্তানায়। দু’টি ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এমনই ‘জটিল’ যোগসূত্রে এক মঞ্চে ‘বাঁধা পড়লেন’ অভিষেক-শুভেন্দু!