ভোটের টাকা কমিশন দিক, চাইলেন মমতা

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ফের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংস্কার দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, ভোটের খরচের ব্যবস্থা করা হোক সরকারি তহবিল থেকে। তা হলে ভোট প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৬ ০৪:৪৮
Share:

বিধানসভায় মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ফের নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সংস্কার দাবি করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, ভোটের খরচের ব্যবস্থা করা হোক সরকারি তহবিল থেকে। তা হলে ভোট প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।

Advertisement

সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা ভোটে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বারবার সংঘাতে জড়িয়েছে তৃণমূল। ভোটের পরেও কমিশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা থেকে সরেনি শাসক দল। এই বিষয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া থেকে সংসদে সরব বা রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হওয়া, সম্ভাব্য সব পথের কথাই বলে রেখেছে তারা। নির্বাচনী সংস্কারের দাবির মোড়কে মুখ্যমন্ত্রী আসলে কমিশনের ভূমিকার বিরুদ্ধেও বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে তৃণমূলের একাংশের ধারণা। কারণ, মঙ্গলবার বিধানসভায় মমতা যেমন বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন ভোটের টাকাটা দিক! তা হলে আর কালো টাকা, কালো টাকা করে চিৎকার করে নাটক করতে হবে না!’’ আবার একই সঙ্গে মন্তব্য করেছেন, ‘‘গণতন্ত্র মানে গণতন্ত্রের কার্ফু নয়! তন্ত্র মানে গণতন্ত্রের উৎসব।’’ এমন মন্তব্যের লক্ষ্য কমিশন বলেই মনে করা হচ্ছে।

এর আগে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কুপন কেলেঙ্কারির অভিযোগ এনেছিল বামেরা। এ বারের ভোটেও কালো টাকা নিয়ে বিরোধীরা সরব ছিল। সে সব অভিযোগ অসার বলে বোঝাতে এ দিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সরকারি অনুদানে নির্বাচন, প্রশাসনিক এবং অর্থনৈতিক সংস্কার দিয়ে শুরু হোক। এখানে আলোচনার জন্য এই বিষয়টা বলে রাখলাম।’’

Advertisement

বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানেও নির্বাচনী সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন মমতা। তবে বামেদের এই দাবি অনেক আগেই তাদের দলীয় নথিতে লিপিবদ্ধ। এমনকী, তাঁরা আগেই কমিশনের কাছে এই দাবি করেছেন বলে বামেদের পরিষদীয় দলনেতা (আলিমুদ্দিনে এ দিনই বামফ্রন্টের বিধায়কেরা তাঁকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নেতা বেছেছেন) সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নির্বাচন কমিশনকে লিখিত নথি দিয়েছি। কেবল এই পদক্ষেপ করলেই কালো টাকার ব্যবহার কমে যাবে, এমনটা হয়তো নয়। তবে এটা একটা পদক্ষেপ নিশ্চয়ই হতে পারে।’’ পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আবার পাল্টা বলেন, ‘‘অনেক বছর আগে কমিশন মতামত জানতে চেয়েছিল। আমরাই প্রথম লিখিত ভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলাম সরকারি তহবিলে নির্বাচন করাতে।’’ কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা আব্দুল মান্নান অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আগে উনি অন্য রাজ্যের সঙ্গে কথা বলুন। উনি একা এটা বললে কেউ মানবে?’’

মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কমিশন বিঘ্নিত করেছে, শাসক দলের এমন অভিযোগও মানতে নারাজ বিরোধীরা। সুজনবাবু বলেন, ‘‘আমরা তো দেখছি, মানুষের উপরে কার্ফু জারি হয়েছে! ভোট মিটলেও মানুষ বাড়িতে থাকতে পারছেন না।’’ একই সুরে মান্নানের বক্তব্য, ‘‘উনি (মমতা) ভুল করে সত্যি কথাটা বলে ফেলেছেন! রাজ্যে গণতন্ত্রে কার্ফু চলছে। গণতন্ত্রকে বাইরে আসতে দেওয়া হচ্ছে না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন