দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র
সোদপুরের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের পাশে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। মৃত ওই ব্যাক্তির নাম দিলীপ দত্ত (৭৫)। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই সময় স্টেশন সংলগ্ন বাজার থেকে সবজি কিনে রেল লাইনের উপর দিয়ে হেঁটে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ই এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে পড়ে একটি আপ কৃষ্ণনগর গ্যালপিং। সোদপুরে ট্রেনটির স্টপেজ না থাকায় সেটি না থেমেই দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায়। দিলীপবাবু লাইনের এক পাশে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও ট্রেনের কাউ ক্যাচারে ধাক্কা লাগে তাঁর মাথায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। এরপর থেকেই সোদপুর স্টেশনের আপ ও ডাউন লাইন অবরোধ শুরু করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীরা। এর জেরে দু’ঘন্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে শিয়ালদহ মেন শাখায়। পরে রেল পুলিশের হস্তক্ষেপে উঠে যায় অবরোধ।
আরও পড়ুন: স্কুল বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ, মৃত ২০ পড়ুয়া
সূত্রের খবর, মৃত ওই ব্যক্তির বাড়ি সোদপুরের নিউ কলোনি এলাকায়। এ দিন সকালে বাজার করতে স্টেশনে এসেছিলেন তিনি। বয়স হওয়ায় কানে কম শুনতেন দিলীপবাবু। তাই ট্রেন আসার ঘোষণা বা ট্রেনের হর্ন কোনওটাই শুনতে পাননি তিনি। পাশাপাশি, সোদপুরের স্টেশন ও বাজার সংলগ্ন হওয়ায় এই চত্বর বরাবরই বেশ জনবহুল। ফুটব্রিজ থাকলেও এখানে রোজকার যাতায়াত চলে লাইন ধরেই। এই সমস্যার সমাধানের জন্য এখানে সাবওয়ের কাজ শুরু হলেও এখনও তা অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এক নম্বর লাইনের পাশেই সাবওয়ের ব্যারিকেড থাকার ফলে এই লাইনের দু’পাশের জায়গা আরও কমে গিয়েছে। ফলে ট্রেন আসছে দেখে শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হননি দিলীপবাবু।
ক্ষতিগ্রস্থ মেশিন পরখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। নিজস্ব চিত্র
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই সময় ঘোষণা করা হয়েছিল তিন নম্বর প্ল্যাটফর্মে থ্রু ট্রেন আসবে। কিন্তু কোনও ঘোষণা ছাড়াই এক নম্বরে চলে আসে ওই থ্রু ট্রেন। পরে আবার তিন নম্বরেও আরও একটি থ্রু ট্রেন ঢোকে। এরপরেই দিলীপবাবুর মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় মানুষ ও নিত্যযাত্রীরা। এই সময় একটি ডাউন নৈহাটি লোকাল স্টেশনে ঢুকলে ভেঙে ফেলা হয় ট্রেনের দরজা ও গার্ড রুম। সিগনাল রুম, টিকিট কাউন্টার, টিকিট ভেন্ডিং মেশিনেও ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। পরে বিরাট রেল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অবশেষে দুপুর ১২ টা নাগাদ উঠে যায় অবরোধ। সপ্তাহের মাঝের কাজের দিনে টানা দু’ঘন্টা অবরোধ চলায় সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা।