প্রতীকী ছবি।
একচিলতে ঘরে টিভিতে বিশ্বকাপ দেখার সঙ্গে আয়োজন হয়েছিল মদ-জুয়ার আসরের। সেখানেই জুয়ার টাকা নিয়ে বচসার জেরে গুলিতে খুন হলেন এক যুবক। কিছুক্ষণের মধ্যে অভিযুক্তকে রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠল ওই দলেরই কয়েক জনের বিরুদ্ধে।
শনিবার, চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রথম বর্ষপূর্তির রাতে চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ের কাছে জোড়া খুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। গুলিতে নিহত প্রদীপ দস্তিদার (৩৪) চুঁচুড়ার ধরমপুরের বাসিন্দা ছিলেন। গণপ্রহারে মৃত মহম্মদ নজরুলের (৩২) বাড়ি চুঁচুড়ার খুশিগলি বাগদিপাড়ায়। কিন্তু সে সেখানে থাকত না। দু’বছর আগেও খুশিগলির চার যুবককে খুনের ঘটনায় তার নাম জড়িয়েছিল। সম্প্রতি সে জামিনে ছাড়া পেয়ে অন্যত্র থাকা শুরু করে।
রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার জানান, জুয়া নিয়ে গোলমাল থেকেই গোটা ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। অভিযুক্তেরা পলাতক। খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাদিনা মোড়ের কাছে জি টি রোডের ধারে একটি টালির চালের পরিত্যক্ত ঘরে কয়েক মাস ধরে প্রতি রাতে মদ-জুয়ার আসর বসছিল। বিশ্বকাপ উপলক্ষে টিভিও বসানো হয়। শনিবার পর্তুগাল-উরুগুয়ে ম্যাচের সময়ে উপস্থিত ছিলেন প্রদীপ, নজরুল-সহ জনাদশেক যুবক। জুয়ার টাকা নিয়ে প্রদীপ-নজরুলের বচসা বাধে। নজরুল আগ্নেয়াস্ত্র বের করে প্রদীপের মাথা লক্ষ করে চালিয়ে দেয়। এর পরে সে পালানোর চেষ্টা করলে দলের কয়েক জন ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে। শুরু হয় মার। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় নজরুলের। প্রদীপকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান। পুলিশ গিয়ে দেহ দু’টি উদ্ধার করে।
রবিবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, পরিত্যক্ত ঘরে মদের বোতল, তাস ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মদ-জুয়ার আসরের প্রতিবাদ করলে হুমকি আসত। এ সব বন্ধে পুলিশ কখনও উদ্যোগী হয়নি। ওই এলাকার বাসিন্দা অমলেশ সাধুখাঁ বলেন, ‘‘জেলা সদরের বুকে এই ধরনের ঘটনায় মানুষের নিরাপত্তা বলে কিছুই রইল না।’’ পুলিশের দাবি, মদ-জুয়ার আসর নিয়ে কোনও অভিযোগ আগে জানানো হয়নি।