সদলবলে তৃণমূলে। —ফাইল চিত্র।
‘প্রতীক্ষার অবসান’ ঘটিয়ে অবশেষে তৃণমূলে যোগ দিলেন সবং-এর কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। একা নয়, সদলবলে কংগ্রেস ছেড়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের এই প্রাক্তন সভাপতি। আর প্রত্যাশিত ভাবেই কংগ্রেসের বর্তমান নেতৃত্বকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তিনি। অধীর চৌধুরী ‘বাম রাজনীতির উচ্ছৃঙ্খল প্রতীক’— মন্তব্য মানসের। তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় সোমবার মানস ভুঁইয়াদের তৃণমূলে স্বাগত জানিয়েছেন।
এ দিন বিকেলে তৃণমূল ভবনে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে দল বদলেছেন মানস ভুঁইয়া। কংগ্রেসে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর অনুগামী হিসেবে পরিচিত ছিলেন যাঁরা, সেই কনক দেবনাথ, খালেদ এবাদুল্লা, মনোজ পাণ্ডে এবং অজয় ঘোষও মানসবাবুর সঙ্গেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। কংগ্রেসের প্রাক্তন পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব এবং আর এক প্রবীণ নেতা তথা এআইসিসি সদস্য অসিত মজুমদারও মানস ভুঁইয়ার সঙ্গেই কংগ্রেস ছেড়ে এ দিন তৃণমূলে সামিল হয়েছেন। পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মুকুল রায় তাঁদের সবাইকে পাশে নিয়ে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। পার্থবাবু উচ্ছ্বাস নিয়ে বলেন, ‘‘প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আমাদের পুরনো সহকর্মী মানস ভুঁইয়া অবশেষে আবার আমাদের সঙ্গে এলেন।’’ আর মানস ভুঁইয়া বলেন, তৃণমূলই আসল কংগ্রেস, প্রদেশ কংগ্রেস এখন অধীর-মান্নানদের দল। অধীর চৌধুরী এবং আবদুল মান্নানকে এ দিন ‘জগাই-মাধাই’ আখ্যা দিয়েছেন মানস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে তীব্র আক্রমণ করে মানস বলেছেন, ‘‘অধীর চৌধুরী ছিলেন বামে। কংগ্রেসে ঢুকে অতীশ সিংহের কাছা ধরে টানলেন। নির্বাচনে অতীশ সিংহকে হারালেন, মায়ারানি পালকে হারালেন। বাম রাজনীতির সেই উচ্ছৃঙ্খল প্রতীক অধীর চৌধুরী এখন বসে বসে জ্ঞান দেবেন আর মানস ভুঁইয়াকে তা শুনতে হবে!’’ প্রদেশ কংগ্রেসের সদর দফতর বিধান ভবনকে ভুতুড়ে বাড়ি বলেও এ দিন আখ্যা দিয়েছেন মানস ভুঁইয়া।
এই ছবি এখন অতীত। —ফাইল চিত্র।
মানস ভুঁইয়া যে কংগ্রেস ছাড়বেন, সে জল্পনা অনেক দিন ধরেই চলছিল। কংগ্রেস বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদটি সিপিএম-কে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া সত্ত্বেও ওই পদে অপ্রত্যাশিত ভাবে মানস ভুঁইয়ার নাম ঘোষিত হওয়ার পরই টানাপড়েন প্রকাশ্যে আসে। এর পর থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে সবং-এর বিধায়কের সঙ্ঘাত ক্রমশ বেড়েছে। কিছু দিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা মানসবাবুর ভাই বিকাশ ভুঁইয়া সদলবলে তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দেয় সবং পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসি বোর্ডও। অধীর চৌধুরী তার পরই কটাক্ষের সুরে বলেছিলেন, ‘‘আরও কোনও কোনও ভুঁইয়া তৃণমূলে যাবেন, তা আমরা জানি।’’ সোমবার সেই জল্পনার অবসান ঘটল।