মালদহে পঞ্চায়েত বোর্ড গড়তে তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নুর। তার আগে মহাজোট গড়ার লক্ষ্যে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন আবু হাসেম (ডালু) খান চৌধুরী। মালদহের দুই সাংসদের কার্যকলাপ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে তীব্র প্রতিক্রিয়া। নালিশ জমা পড়ছে এআইসিসি-র কাছে। এই পরিস্থিতির মধ্যেই এআইসিসি-র তরফে বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈয়ের কাছে গিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানিয়ে দিলেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের নৈকট্য হলে রাজ্যে বিজেপিরই আরও বাড়বাড়ন্ত হবে।
আন্দামানে সংগঠনের কাজ সেরে শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় এসেছেন গৌরব। অসম ভবনে সন্ধ্যায় তাঁর সঙ্গে বৈঠক হয়েছে মান্নানের। কংগ্রেস সূত্রের খবর, দু’জনের বৈঠকে সরাসরি মালদহের প্রসঙ্গ ওঠেনি। তবে বিরোধী দলনেতা যুক্তি দিয়েছেন, তৃণমূলের বিরোধিতায় কংগ্রেস তার ভূমিকা পালন করলেই ভাল। বিরোধী হিসেবে ইতিমধ্যেই জাঁকিয়ে বসেছে বিজেপি। এর পরে কংগ্রেস তৃণমূলের দিকে চলে গেলে বিরোধী পরিসরে বিজেপির আরও সুবিধা হবে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর ডাকা বৈঠকে বিরোধী দলনেতা বলেছিলেন, রাজ্যে কংগ্রেসের মধ্যে কারা এখন তৃণমূলপন্থী আর কারা বিজেপিপন্থী, তা তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। গৌরবকেও তিনি একই কথা বলেছেন। পরে মান্নান এ দিন বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের ব্যাপারে এআইসিসি-ই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি বলেছি, যত দ্রুত সিদ্ধান্ত হয়, ততই ভাল। কোনও ভাবেই বিজেপির সুবিধা করে দেওয়া উচিত হবে না।’’
বিজেপিকে আটকানোর যুক্তি দিয়েই মালদহে তৃণমূলকে সমর্থনের কথা বলেছেন মৌসম। কিন্তু তা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেসে প্রশ্ন ওঠা অব্যাহত। দলের আইনজীবী-নেতা এবং এআইসিসি সদস্য ঋজু ঘোষালও এ দিন গৌরবকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস কর্মীরা শাসক দলের হাতে আক্রান্ত। নিচু তলার কর্মীদের ভাবাবেগ অগ্রাহ্য করেই কি কংগ্রেস হাইকম্যান্ড তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে? মালদহের ঘটনার পরে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, এআইসিসি-র কাছে তা দ্রুত নিরসনের দাবি করেছেন ঋজুও।
গৌরব অবশ্য এখনও প্রকাশ্যে এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে দলের অন্দরে তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস কর্মীদের মনোভাব উপেক্ষা করে এআইসিসি কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না।