DYFI

DYFI: বাম বিক্ষোভে খণ্ডযুদ্ধ, জখম বহু, ধৃত ১৩৩

এসএসসিতে দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় প্রতিদিনই করুণাময়ী চত্বরে বিক্ষোভ চলছে। ফলে ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২২ ০৬:৫৪
Share:

করুণাময়ী মোড়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের। নিজস্ব চিত্র

আগের দিনেই মঞ্চ বেঁধে বিজেপির বিক্ষোভ কর্মসূচি রুখে দিয়েছিল পুলিশ। শুক্রবার বাম যুব ও ছাত্র সংগঠনের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) অফিস অভিযান ঘিরে সল্টলেকের করুণাময়ীতে ধুন্ধুমার বেধে যায়। স্কুলে শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ডিওয়াইএফ-সহ বিভিন্ন বামপন্থী যুব ও ছাত্র সংগঠনের অভিযানে সকাল থেকেই করুণাময়ী এবং সিটি সেন্টারের কাছে সমবেত হতে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। পুলিশের তরফেও প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। অভিযান ঠেকাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিক্ষোভকারীদের। খণ্ডযুদ্ধে দু’তরফেরই কয়েক জন আহত হন। বামেদের অভিযোগ, ১৩০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানায়, ধৃতের সংখ্যা ১৩৩।

Advertisement

এসএসসিতে দুর্নীতির অভিযোগে প্রায় প্রতিদিনই করুণাময়ী চত্বরে বিক্ষোভ চলছে। ফলে ওই এলাকায় পুলিশি নজরদারিও জোরদার করা হয়েছে। এ দিনও লোহার গার্ডরেল, জলকামান নিয়ে প্রস্তুত ছিল পুলিশ। অভিযান শুরুর আগেই করুণাময়ী থেকে ছাত্রছাত্রীদের গ্রেফতার করা শুরু হয়। কিন্তু সিটি সেন্টারের দিক থেকে একটি বড় মিছিল পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ইন্দিরা ভবনের ছাড়িয়ে এগোতে থাকে। তখনই তাঁদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। সেই মিছিল আটকাতে করুণাময়ীর দিক থেকেও ছুটে আসে পুলিশ। ইন্দিরা ভবন ও করুণাময়ীর মধ্যে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। বিক্ষোভকারীদের জোর করে বাসে তোলার সময় দেখা যায়, অনেকে পুলিশকে পতাকার লাঠির খোঁচা দিচ্ছেন। পাল্টা পুলিশও কয়েক জনকে লাঠিপেটা করে। যদিও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন পুলিশকর্তারা। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পুলিশের ব্যাপক মারধরে আহত এআইএসএফের রাজ্য সম্পাদক বিক্রম মণ্ডলকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।

এর আগে জলকামান দেগে বিজেপির দু’টি আন্দোলন ভেস্তে দিয়েছিল পুলিশ। এ দিন বিক্ষোভকারীর সংখ্যা যথেষ্ট বেশি থাকলেও পুলিশ আধিকারিকদের ব্যাখ্যা, জলকামান ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি।

Advertisement

এ দিনের ওই বিক্ষোভ মিছিলে বাম নেত্রী তথা ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ছাড়াও কলতান দাশগুপ্ত, দেবাঞ্জন দে, অর্ণব হাজরাদের মতো বাম ছাত্রনেতারা যোগ দেন। সকলকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। মীনাক্ষী বলেন, ‘‘আমরা এসএসসি-র দুর্নীতিতে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানাতে এসেছিলাম। আমাদেরই মারধর করে গ্রেফতার করল পুলিশ।’’

আরএসপি-র কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ অত্যাচার ও গ্রেফতার করেছে। তৃণমূল-শাসিত আজব বাংলা! পুলিশি পাহারায় চোরেরা জেলের বাইরে থাকে, প্রতিবাদীদের জেল হয়।’’

সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নেতা সুজন চক্রবর্তী টুইট করে বলেন, ‘‘চোরেরা নবান্নে, প্রতিবাদীরা রাস্তায়, পুলিশের হেফাজতে।’’

সল্টলেকের ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বৌবাজারে ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া মোড়ে ছাত্র ব্লক-যুব লিগের অবস্থান বিক্ষোভ চলে। সারা ভারত ছাত্র ব্লক রাজ্য সভাপতি শাফিউল হাসান, যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক সমন্বয় বিশ্বাস, মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ সকলের নিঃশর্ত মুক্তি এবং অবিলম্বে পরেশ অধিকারী ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বরখাস্তের দাবি জানানোহয়।

তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বাম জমানায় এ রাজ্যে একাধিক বার প্যানেল বাতিল হয়েছে। প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায় বাম জমানাতেই ১০ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। মিথ্যাচার করে তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে তা আড়াল করতে পারবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন