ঠাঁই নেই ইন্ডোরে, ফিরলেন অনেকেই

ভিড় যে হবে, তা জানা ছিল। হয়েও ছিল তাই। কিন্তু বাধ সাধল স্থান সংকুলান। শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা সম্মেলনে ভিতরে ঢুকতেই পারলেন না কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:৩৩
Share:

ভিড় যে হবে, তা জানা ছিল। হয়েও ছিল তাই। কিন্তু বাধ সাধল স্থান সংকুলান। শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা সম্মেলনে ভিতরে ঢুকতেই পারলেন না কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের একটা বড় অংশ। তবে এই ক্ষোভ নিয়ে দিনটা শুরু হলেও, সম্মেলন শেষে তা ঢেকে গিয়েছে প্রাপ্তির খুশিতে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি পৌঁছেও তাঁকে সামনে থেকে দেখতে না-পাওয়ায় রীতিমতো হতাশ হন অনেকে। কেউ কেউ আবার ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়েও যান। কিন্তু তাঁদের এই হতাশা আর ক্ষোভে প্রলেপ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীই। সম্মেলনের শেষে তিনি যে ভাবে ডালি উপুড় করে একগুচ্ছ সুবিধার কথা ঘোষণা করেছেন, তাতে আনন্দ নিয়েই ঘরে ফিরলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা।

শনিবার দুপুরে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রীর শিক্ষা সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। জায়গা মিলবে কি মিলবে না, সেই সংশয়ে পড়ে মালদহ, আলিপুরদুয়ার— এ সব জেলা থেকে বাসে করে শুক্রবারই কলকাতায় এসে পৌঁছেছিলেন অনেকে। এ দিন সকাল থেকেই রেড রোডের পাশের মাঠটি ভরে গিয়েছিল অসংখ্য বাসে। বেলা গড়াতে নেতাজি ইন্ডোরের সামনে ভিড়ও বাড়তে থাকে।

Advertisement

সকালেই স্টেডিয়ামের ভিতরে ঢুকে পড়েছিলেন অনেকে। কিন্তু যাঁরা সেই প্রথম দফায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি। তাঁরা পরেও আর সুযোগ পাননি। কারণ দর্শক আসন তো বটেই, বাইরের সিঁড়িতেও পা রাখার জায়গা ছিল না। দুপুর আড়াইটে নাগাদ ইন্ডোরের প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকে সামনেই দাঁড়িয়ে পড়েন বহু শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী। সেখানে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় মশগুল হন ঠিকই। কিন্তু তাঁদের কথায় বারেবারে উঠে আসছিল ভিতরে ঢুকতে না-পারার আক্ষেপ।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গিয়াসউদ্দিন সিদ্দিকী বেলা বারোটায় পৌঁছেও ভিতরে ঢুকতে পারেননি। বিরক্ত হয়ে বাইরের বড় স্ক্রিনে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখেই সাধ মেটান তিনি। ভিতরের অবস্থাও তেমন ভাল ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী সবে বক্তব্য শুরু করতে যাবেন, তখনই মঞ্চের ডান দিক থেকে চিৎকার করে সকলে বলতে থাকেন, যে তাঁরা শুনতে পাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের নীচে নেমে আসতে বলেন। কয়েক জন নেমে এলেও, দাঁড়ানোর সুবিধা করতে পারেননি। তবে ভিড়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংখ্যা ছিল খুবই কম। প্রেসিডেন্সির রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের চিঠিতে শিক্ষা সম্মেলনের কথা শিক্ষক সংগঠনগুলিকে জানানোর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্সিতে সেই অর্থে কোনও শিক্ষক সংগঠন নেই। তাই হয়তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা কম ছিল।’’

বিশাল জনসভার মতো থিকথিকে ভিড়ে অনেকেই এ দিন ভাল করে শুনতে পাননি মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা। রীতিমতো বিরক্ত হয়েছেন তাঁরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যখন একের পর এক সুবিধা ঘোষণা করছেন, তখন কর্পূরের মতো উবে গিয়েছে বিরক্তি। স্বাস্থ্য বিমা থেকে শুরু করে ভ্রমণের সুবিধা, গবেষণায় ছুটি থেকে শুরু করে অবসরের সময়সীমা বাড়ানোর কথা ঘোষণা হতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সকলে। রায়গঞ্জ কলেজের এক শিক্ষক বলেন, ‘‘টানা দু’ঘণ্টা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকায় যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় সব কষ্ট উধাও। এতটা আশা করিনি!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন