UGC

উত্তরপত্র জমা দিতে দু’ঘণ্টা চান অধ্যক্ষেরা

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি নির্দেশ দিয়েছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ওই পরীক্ষা নিতে হবে দু’-তিন ঘণ্টার মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে মাত্র আধ ঘণ্টায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের চূড়ান্ত সিমেস্টার ও চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার উত্তরপত্র ‘আপলোড’ করা বা পাঠানো অসম্ভব বলেই মনে করছেন বহু অধ্যক্ষ। শিক্ষা সূত্রের খবর, আজ, সোমবার পরীক্ষা-পদ্ধতি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) আশিস চট্টোপাধ্যায়ের বৈঠকে উত্তরপত্র পাঠানোর জন্য পরীক্ষার্থীদের অন্তত দু’ঘণ্টা সময় দেওয়ার আর্জি জানাবেন অধ্যক্ষেরা।

Advertisement

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি নির্দেশ দিয়েছে, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ওই পরীক্ষা নিতে হবে দু’-তিন ঘণ্টার মধ্যে। এর সঙ্গে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোড করার জন্য দেওয়া হবে বড়জোর আধ ঘণ্টা। কিন্তু আধ ঘণ্টার মধ্যে পড়ুয়ারা কী করে উত্তরপত্র পাঠাবেন, বহু কলেজের অধ্যক্ষই তা নিয়ে চিন্তিত। তাই ওই সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন জানানোর রাস্তা নিচ্ছেন তাঁরা। রবিবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ওয়েবসাইটে স্নাতকের চূড়ান্ত সিমেস্টার ও চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার সময় উল্লেখ করে নতুন ভাবে পরীক্ষাসূচি প্রকাশ করেছে। পরীক্ষার দিন অপরিবর্তিত রয়েছে। পরীক্ষা হবে দু’ঘণ্টা ধরে, বেলা ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত।

আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় স্থির করেছিল, বাড়িতে বসে পড়ুয়ারা পরীক্ষা দেবেন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপত্র ই-মেল, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠাবেন অথবা হাতে হাতে জমা দেবেন কলেজে। কিন্তু ইউজিসি তার পরে নির্দেশ দেয়, ২৪ ঘণ্টা নয়, পরীক্ষা নিতে হবে দু’-তিন ঘণ্টার মধ্যে। এর সঙ্গে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোড করার জন্য আধ ঘণ্টা দেওয়া যেতে পারে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ প্রবীর দাস এ দিন বলেন, ‘‘আধ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার্থীরা কী ভাবে উত্তরপত্র জমা দেবেন, বুঝতে পারছি না।’’ এর আগে উপাচার্যের বৈঠকে তাঁর কলেজের পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা জানিয়েছিলেন প্রবীরবাবু। মৌসুনি দ্বীপ, জি প্লট, রাক্ষসখালির মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েরা তাঁর কলেজে পড়েন। অনেক পরীক্ষার্থীরই স্মার্টফোন নেই। বাড়ি থেকে সাইবার ক্যাফেও অনেক দূরে। ঘূর্ণিঝড় আমপানের সময় থেকে সুন্দরবনে ইন্টারনেট পরিষেবার মান অত্যন্ত খারাপ। ফলে উত্তরপত্র জমা দেওয়ার জন্য পরীক্ষার্থীদের নদী পেরিয়ে আসতে হবে কলেজেই। ‘‘আধ ঘণ্টায় সেটা কী করে সম্ভব,’’ প্রশ্ন, প্রবীরবাবুর। তিনি জানান, কলেজ ভবনের নীচের তলা স্যানিটাইজ় বা জীবাণুমুক্ত করে রাখা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা যদি সেখানকার শ্রেণিকক্ষে বসে পরীক্ষা দিয়ে খাতা জমা দিয়ে বাড়ি যান, তিনি তাতে কোনও রকম আপত্তি করবেন না।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিদ্যানগর কলেজের অধ্যক্ষ সূর্য আগরওয়াল জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলের বহু পড়ুয়া আছেন তাঁর কলেজেও। তাঁদের পক্ষে আধ ঘণ্টার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ বা ই-মেলে স্ক্যান করে উত্তরপত্র পাঠানো অসম্ভব। পিডিএফ ফাইল কী ভাবে বানাতে হয়, অনেকেই তা জানেন না। অনেকের কাছেই স্মার্টফোন, ইন্টারনেট নেই। কলেজে এসেই তাঁদের উত্তরপত্র জমা দিতে হবে। ‘‘যদি কোনও পরীক্ষার্থী আধ ঘণ্টার পরে কলেজে এসে উত্তরপত্র জমা দিতে চান, তাঁকে কি ফেরানো যায়,’’ প্রশ্ন ওই অধ্যক্ষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন