জলে ভাসছে দক্ষিণবঙ্গ

এল নিনোর দাপটে চলতি মরসুমে বৃষ্টি বেশ কম হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল হাওয়া অফিস। কিন্তু ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপের জেরে রাজ্যের এখন নাজেহাল অবস্থা। বেশ কিছু নদীর জল পৌঁছে গেছে বিপদসীমার একেবারে কাছে। জল ছাড়তে শুরু করেছে বেশ কিছু জলাধার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৫ ১৮:১০
Share:

তিলপাড়া ব্যারেজ থেকে ডিভিসি জল ছেড়েছে, ভেসে গিয়েছে ময়ুরাক্ষী নদীর উপর কজওয়ে। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

এল নিনোর দাপটে চলতি মরসুমে বৃষ্টি বেশ কম হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল হাওয়া অফিস। কিন্তু ঘূর্ণাবর্ত এবং নিম্নচাপের জেরে রাজ্যের এখন নাজেহাল অবস্থা। বেশ কিছু নদীর জল পৌঁছে গেছে বিপদসীমার একেবারে কাছে। জল ছাড়তে শুরু করেছে বেশ কিছু জলাধার। এবং তার ফলে প্লাবিত হতে শুরু করেছে বেশ কিছু নিচু জায়গা।

Advertisement

সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুর্শিদাবাদের। টানা বৃষ্টি ও নদীর জলে বানভাসি সুতি-১ ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রাম। অভিযোগ, গোটা কয়েক ত্রিপল ছাড়া দুর্গতরা আর কিছুই পাননি। খাবার ও নৌকো পৌঁছয়নি। গোটা পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা। সুতি ১ বিডিও দীপঙ্কর রায় জানান, জেলা প্রশাসনের কাছে ত্রাণ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু ত্রিপল ছাড়া কিছুই মেলেনি।

শুক্রবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে বর্ধমানের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ডিভিসি জল ছাড়ায় খণ্ডঘোষের লোধনায় বেশ কয়েকটি এলাকায় জল জমেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত দামোদরের জল বিপদসীমার উপর বইছে না বলেই খবর। টানা বৃষ্টির জেরে গুসকরা, পশ্চিম ভাতার, বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর, দেওয়ানদিঘি-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় জল জমেছে। এ ছাড়া কালনার কামারশালা গলি, মেডিসিন কমপ্লেক্স, আদালত চত্বরেও জল জমেছে। মন্তেশ্বরের চকঘোবাড়ি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের রাস্তা সম্পূর্ণ জলের তলায়। পূর্বস্থলীর নাদনঘাট এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খেত জলের তলায় চলে গিয়েছে।

Advertisement


কান্দিতে জলমগ্ন সড়ক। গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।

জল জমেছে হুগলির বেশ কিছু জায়গাতেও। শনিবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টির জেরে জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় জল জমেছে। কোন্নগর, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, চুঁচুড়া, পাণ্ডুয়া-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রাস্তা চলে গেছে জলের তলায়।

কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কুমারী ও কংসাবতী নদীতে জল বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে শনিবার পাঁচ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। তবে এ জন্য জেলার কোথাও প্লাবনের আশঙ্কা নেই বলে দাবি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। কংসাবতী সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (১) বিশ্বনাথ কুমার বলেন, “কংসাবতীর মুকুটমণিপুর জলাধারে সর্বোচ্চ জলধারণ ক্ষমতা ৪৪১ ফুট। এ দিন দুপুর পর্যন্ত জলাধারে ৪২৩ ফুট জল মজুত রয়েছে (বিপদসীমা ৪৩৪ ফুট)। তাই পাঁচ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়েছে। তবে এতে কোনও এলাকা প্লাবিত হবে না।” তবে জল ছাড়ায় রানিবাঁধ ও খাতড়ার মধ্যে কেচোন্দাঘাটের কজওয়ে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এতে ওই নিচু সেতু দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তুমুল বৃষ্টিতে বিষ্ণুপুর শহরের কয়েকটি নিচু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বাড়ির উঠোনও জলের তলায় চলে যায়।

শান্তিনিকেতনের গোয়ালপাড়া সেতুর উপর দিয়ে বইছে কোপাই নদী। ছবি: বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী।

এই সংক্রান্ত আরও খবর...
জলে ডুবল জেলা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন