অপেক্ষার ৪ ঘণ্টা, তবু এল না ইস্তফা

এ দিকে মেয়র পদে শোভনবাবু ইস্তফা দিলে কী হতে পারে, তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন পুর কমিশনার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:০৩
Share:

শূন্য: কলকাতা পুরসভায় মেয়রের ঘর। বুধবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নবান্নে জানিয়েছিলেন, মন্ত্রিত্বে ইস্তফা নয়, মেয়রের পদও ছাড়তে বলা হয়েছে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। সেই খবর পৌঁছতেই সে দিন সন্ধ্যা থেকে তৎপরতা শুরু হয় পুরমহলে। বুধবার সরকারি ছুটি হওয়া সত্ত্বেও পুর প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে, তাই নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন পুর কমিশনার খলিল আহমেদ। বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যেই পুরসভার বিশেষ কমিশনার-সহ পদস্থ আধিকারিকদের হাজির থাকতে বলা হয়।

Advertisement

পাশাপাশি দলের নির্দেশে পুরভবনে হাজির হন চেয়ারপার্সন মালা রায়ও। পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিতে হলে পদত্যাগ পত্র জমা দিতে হয় পুরসভার চেয়ারপার্সনের কাছে। সেই হিসেবেই এ দিন মালাদেবীকে নিজের অফিসে বসার নির্দেশ দেয় তৃণমূল নেতৃত্ব। বেলা ১২ টার পরই মালাদেবী পুরভবনে পৌঁছে যান। প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। বিকেলে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বলেন, ‘‘কোনও পদত্যাগপত্র জমা পড়েনি।’’

এ দিকে মেয়র পদে শোভনবাবু ইস্তফা দিলে কী হতে পারে, তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন পুর কমিশনার। পুর আইনের ব্যাখ্যার বিষয় তুলে পদস্থ এক পুর অফিসার বলেন, ‘‘আইনের ৯ডি ধারায় বলা আছে মেয়র পদত্যাগ করলে পুরো মেয়র পারিষদ বাতিল হয়ে যাবে। কারণ মেয়র পারিষদদের মনোনীত করেন স্বয়ং মেয়র। তাই নতুন কেউ মেয়র হওয়া মানে মেয়র পারিষদ পদে যাঁরা রয়েছেন সকলের পদ চলে যায়।’’ মঙ্গলবার রাতেও তাঁদের ধারণা ছিল, মেয়র ইস্তফা দিলে ডেপুটি মেয়র তাঁর কাজ চালাতে পারবেন। কিন্তু এ দিন আইনের বই দেখে তাঁদের চিন্তা বাড়ে। ঠিক হয়, মেয়র ইস্তফা দিলে নতুন করে মেয়র নির্বাচন করতে হবে। তাতে নোটিস দেওয়ার জন্য কমপক্ষে ১০ দিন সময় লাগবেই। তার পর নতুন মেয়র নিবার্চনের দিন ক্ষণ জানাবে রাজ্য সরকার। তা পাওয়ার পরে ইস্তফা দেওয়ার দিন থেকে একমাসের মধ্যে নিবার্চন পর্ব শেষ করতে হবে। কিন্তু সেই কাজ কখন শুরু হবে, তা দিনের শেষেও জানতে পারেনি পুর কর্তারা।
কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও বুধবার সন্ধ্যে পর্যন্ত মেয়রের ইস্তফা জমা পড়েনি।

Advertisement

সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বৈঠকের আগে পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ না করলে মেয়র পদ থেকে তাঁকে সরানোর প্রক্রিয়াও তৈরি রাখছে তৃণমূল নেতৃত্ব। পুরসভা সূত্রের খবর, পুরসভায় মোট কাউন্সিলর ১৪৪ জন। ১১৭ নম্বর কাউন্সলরের মৃত্যুর পরে বর্তমানে রয়েছেন ১৪৩ জন। এর মধ্যে তৃণমূল কাউন্সিলরের সংখ্যা শোভনবাবু সহ ১২২ জন। বৈঠকে সকলকেই থাকতে বলা হয়েছে। দলীয় নেতা হিসেবে রাজ্যের পুরসভাগুলোর দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও থাকবেন সেখানে।

নবান্ন সূত্রের খবর, মেয়র হতে গেলে কাউন্সিলর হতেই হবে। এমন নিয়মই রয়েছে পুর আইনে। এখন বাইরে থেকে কাউকে মেয়র পদে বসাতে হলে ওই আইনের সংশোধন করা দরকার। সংশোধনীতে বলা হবে মেয়র পদে বসার পর থেকে ৬ মাসের ভেতরে তাঁকে কোনও ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হিসেবে জিতে আসতে হবে। সেই সংশোধনী বিল আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভায় পেশ করা হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন