ফের আটকে গেল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ১৫০ আসনের অনুমোদন। শনিবার মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার রিপোর্ট পেয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাতে পরিকাঠামোর ১৯ টি ঘাটতি চিহ্নিত করে ওই আসনগুলির অনুমোদন আটকে দিয়েছে এমসিআই। তার ফলে ফের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষের তরফ থেকে বিষয়টি স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতর এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের একটি সূত্র জানিয়েছে, এমসিআই রিপোর্টে যে ১৯ টি ঘাটতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরিতে গবেষণার কাজ না হওয়া, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই না-থাকা, সিটিস্ক্যান যন্ত্র অকেজো থাকা এবং পিপিপি মডেলে নতুন যন্ত্র বসাতে চাওয়া নিয়ে আপত্তির কথা। মেডিক্যালের লাইব্রেরিতে সমস্তই পুরনো বই রয়েছে এবং কোনও চিকিৎসা জার্নাল নেই বলে অভিযোগ। হাসপাতালের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (নিকু) এবং পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিকু) পর্যাপ্ত শয্যা না-থাকা নিয়েও অসন্তুষ্ট এমসিআই।
বরাবর হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন এমসিআইয়ের প্রতিনিধিরা। এ বারও তা বাদ যায়নি। সম্প্রতি পরিদর্শনে এসে হস্টেলে আবর্জনার স্তূপ জমে থাকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তাঁরা। ওয়ার্ডের ভিতরে সাফাইয়ের অভাব তাঁদের নজরে এসেছে। ফটোগ্রাফি সেকশন ঠিক না-থাকা নিয়েও রিপোর্টে উল্লেখও করেছেন। ফটোগ্রাফি সেকশন থাকলেও ফটোগ্রাফার নেই। রেকর্ড সেকশনের বিভিন্ন নথি ফটোগ্রাফি করে রাখার কাজ সেখানে ঠিক মতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরের নজরে রয়েছে। তা নিয়ে ভবিষ্যতে কী ব্যবস্থা নিতে হবে সে ব্যাপারে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার সঙ্গে কথা বলব।’’
পরিকাঠামো সম্পূর্ণ না-হলেও সেগুলি তৈরির শর্তে ৫ বছর আগে ১৫০ আসনে ভর্তির সম্মতি দিয়েছিল এমসিআই। তবে তার পর থেকে অন্তত ছ’বার পরিদর্শন হয়েছে। কখনও ১৪ শতাংশ চিকিৎসক অধ্যাপক না থাকা, কখনও পড়ুয়াদের বসার উপযুক্ত লেকচার থিয়েটার না-থাকা কখনও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব ইত্যাদি কারণে অনুমোদন দেয়নি তারা। এবং প্রতিবারই ঘাটতি পূরণ হয়েছে বলে জানিয়ে পুনরায় পরিদর্শনের আবেদন করেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। অথচ কোনও বারই পরিকাঠামোর ঘাটতি মেটাতে পারেননি তাঁরা। কলেজের সহকারী ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ঘাটতি মেটাতে নিশ্চয়ই পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট ও পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে পর্যাপ্ত শয্যার অভাব থাকার যে কারণ বলা হয়েছে তা নিয়ে অনেকেরই খটকা রয়েছে।’’