মুখ্যমন্ত্রীর অসন্তোষে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয় যে ১০ কোম্পানি নয়, সোমবার ৭ কোম্পানি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে।—ফাইল চিত্র।
সিদ্ধান্ত বদলাল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আগামিকাল অর্থাৎ সোমবারই পাহাড় থেকে ১০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রবিবার সকালে জানিয়েছিল রাজ্য সরকারকে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রবল অসন্তোষের মুখে কিছুটা পিছু হঠল রাজনাথ সিংহের মন্ত্রক। ১০ কোম্পানি নয়, ৭ কোম্পানি বাহিনী ফেরানো হবে বলে জানানো হল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে। বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে অবশ্য উচ্ছ্বসিত হয়ে স্বাগত জানিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গের অনুগামীরা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এ দিন সকালে যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, তাতে জানানো হয়, এই মুহূর্তে দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ১২ কোম্পানি সিআরপিএফ এবং ৩ কোম্পানি এসএসবি রয়েছে। ১৬ অক্টোবর অর্থাৎ সোমবার থেকে ৭ কোম্পানি সিআরপিএফ এবং ৩ কোম্পানি এসএসবি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। বাকি ৫ কোম্পানি সিআরপিএফ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত পাহাড়ে থাকছে বলে কেন্দ্র জানায়।
আরও পড়ুন:পাহাড় থেকে আচমকা বাহিনী প্রত্যাহার কেন্দ্রের, তীব্র ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক দু’দিন আগে পাহাড়ে গুরুঙ্গ অনুগামীদের গুলিতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে সাব-ইনস্পেক্টর অমিতাভ মালিকের। গত রাতে পাতলেবাসে বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গিয়েছে অনেকগুলি বাড়ি এবং মোর্চার পার্টি অফিস। এই পরিস্থিতিতে পাহাড় থেকে ১০ কোম্পানি বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নিল কী ভাবে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে। রাজ্য সরকারের প্রতিবাদ এবং ক্ষোভ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপযুক্ত মহলেই জানিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:গুরুঙ্গপন্থীদের বাড়ি, পার্টি অফিসে আগুন, তথ্য লোপাটের চেষ্টা: পুলিশ
মুখ্যমন্ত্রীর এই অসন্তোষেই কাজ হয়। নবান্ন সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভের কথা জেনেই রাজনাথ সিংহ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পরে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। অবশেষে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেয়, ১০ কোম্পানি নয়, সোমবার ৭ কোম্পানি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। ৮ কোম্পানি আপাতত কিছু দিন দার্জিলিং এবং কালিম্পঙেই থাকবে।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত বদলের আগেই অবশ্য বিমল গুরুঙ্গ শিবিরের তরফে ধন্যবাদ জানানো হয় কেন্দ্রকে। পাহাড় থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্র বুঝিয়ে দিল যে, গোর্খাদের সংহতির প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বিশ্বাস রয়েছে। এমনই লেখা হয়েছে গুরুঙ্গপন্থীদের বিবৃতিতে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছিল বলেও মোর্চার বিবৃতিতে লেখা হয়েছে।