প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার খাসতালুক সবংয়ে বোর্ড গঠন ঘিরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতেই দল পদক্ষেপ করল। মঙ্গলবার সাসপেন্ড করা হল সবংয়ের দেভোগের নারায়ণ সাঁতরা এবং সনাতন দিত্যকে। শাসকদলের অন্দরের রাজনীতিতে দু’জনেই মানস বিরোধী বলে পরিচিত। অভিযোগ, দল নির্ধারিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে পাল্টা প্যানেল দিয়েছিলেন তাঁরা।
এ দিন সবংয়ের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৫টিতে বোর্ড গঠন ছিল। প্রধান, উপপ্রধান নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল নওগা ও দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতে। তৃণমূল সূত্রের খবর, নওগায় প্রধান পদপ্রার্থী করা হয়েছিল মানসবাবুর অনুগামী যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্সের বোন মোবারক বেগমকে। একই ভাবে দেভোগ অঞ্চলেও তৃণমূলের বাছাইয়ে প্রধান পদপ্রার্থী হয় মানস অনুগামী সুকুমার সিংহ। যদিও তৃণমূল সূত্রের খবর, এগুলির বিপক্ষে গিয়ে তৃণমূলের ব্লক কার্যকরী সভাপতি সনাতন দিত্য নওগায় ছবি দত্ত ও দেভোগে সোনিয়া মুর্মুকে প্রধান পদপ্রার্থী বলে প্রস্তাব দেন। ভোটাভুটিতে দেখা যায়, নওগায় প্রধান হিসাবে জয়ী হন ছবি দত্ত, উপপ্রধান হন তপন দাস। আর দেভোগে ভোটাভুটিতে জয়ী হয়ে প্রধান হন সোনিয়া মুর্মু ও উপপ্রধান হন সনাতনবাবু নিজে। সুকুমারবাবুর পক্ষে থাকা সদস্যরা ব্যালট ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ।
এরপরই দুই নেতাকে সাসপেন্ড করে শাসক দল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল ও বিজেপিকে নিয়ে বোর্ড গঠন করার ঘটনা আমরা বরদাস্ত করব না। তাই ওই ব্লকের কার্যকরী সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতিকে আমরা রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে সাসপেন্ড করেছি।”
সনাতনবাবু জেলার বিদায়ী কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতির অনুগামী বলে পরিচিত। আবার অমূল্য মাইতির সঙ্গে মানসবাবুর বিরোধ বহুদিনের। মানসবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের ঝান্ডা ধরে কিছু লোক বিজেপি এবং নির্দলদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক।’’ আর অমূল্যবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলের লোককেই প্রধান পদপ্রার্থী করা হয়েছিল। কিন্তু শুনেছি মানস ভুঁইয়ার অনুগামীরা সেটা মেনে নিতে না পেরে ব্যালট ছিঁড়ে দিয়েছে।”
বোর্ড গঠন ঘিরে ডেবরাতেও তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল সামনে এসেছে। ওই ব্লকের ডুঁয়া-২ গ্রাম পঞ্চয়েতে ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠন হয়। বিষয়টি নিয়ে জেলা তৃণমূল সভাপতি বলেন, “যেখানে আমাদের দলের লোককে নিয়ে ভোটাভুটি হয়েছে সেখানে ঠিক আছে। নির্দলকে নিয়ে বোর্ড গঠন দলবিরোধী।”