আধুনিক নানা সরঞ্জামে সেজে উঠেছে পরীক্ষাগার। নিজস্ব চিত্র।
সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক। ‘বিজ্ঞান মেধা অন্বেষণ’ (সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ) পরীক্ষায় সাফল্য পেল ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ২৬ জন আদিবাসী পড়ুয়া। স্কুলের মোট ৩৭ জন পড়ুয়া কলকাতার ‘জগদীশ বোস ন্যাশন্যাল সায়েন্স ট্যালেন্ট সার্চ’ (জেবিএনএসটিএস) আয়োজিত এই পরীক্ষায় বসেছিল। সফল ২৬ জন আগামী ৩০ অগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতায় সংস্থার সদর দফতরে বিজ্ঞান ভিত্তিক আবাসিক কর্মশালায় যোগ দেওয়ার সুযোগ পাবে।
আদিবাসী পড়ুয়াদের জন্যই ঝাড়গ্রামের এই আবাসিক স্কুল। গত জানুয়ারিতে স্কুলের দায়িত্ব নিয়েছে বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন। আর তারপর থেকেই স্কুলের পরিবেশ রাতারাতি বদলে গিয়েছে। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের পড়ুয়ারা সফল হতে শুরু করেছে নানা ক্ষেত্রে। এমনকী বিজ্ঞানের পড়াশোনাতেও বিশেষ জোর দিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের বিজ্ঞানমনস্ক করে তুলতে ইতিমধ্যে স্কুলে তৈরি হয়েছে আধুনিক পরীক্ষাগার। সেখানে নিয়মিত হাতেকলমে অজানা জিনিস শিখে নিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। স্কুলের ফলেও নজর কাড়ছে একলব্য। চলতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় স্কুলে পাশের হার ছিল ৯৯ শতাংশ।
এ বার বিজ্ঞান মেধা অন্বেষণে পড়ুয়াদের সাফল্যে খুশি রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে ঝাড়গ্রাম একলব্য স্কুলের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দ। তিনি বলেন, “শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের অক্লান্ত পরিশ্রমই এই সাফল্য এনে দিয়েছে।” স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক মানবকুমার মানা, মলয়কুমার বেজ-রা বলছেন, “পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার ১০টি স্কুলে এই পরীক্ষা হয়েছিল। তার মধ্যে আমাদের স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এই নজরকাড়া সাফল্য গুরুত্বপূর্ণ।” সম্প্রতি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরাও জেবিএনএসটিএস-এর বিজ্ঞান শিবিরে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে।
বিজ্ঞানে মেধা অন্বেষণে প্রতি বছর জেলায় জেলায় অষ্টম ও নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন জেবিএনএসটিএস কর্তৃপক্ষ। ঝাড়গ্রামের একলব্য স্কুল জঙ্গলমহলে এই পরীক্ষার নোডাল স্কুল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। গত ২৪ জুন সংস্থার প্রতিনিধিরা স্কুলে এসে ওই পরীক্ষা নেন। ফল জানা যায় ২৩ জুলাই। এই সাফল্যে খুশি ছাত্রছাত্রীরাও। সুরাই, কাকলি, বাবুলালদের কথায়, “হঠাৎ স্কুলের সব কিছু বদলে গিয়েছে। নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলার মধ্যে পড়াশোনায় যে এত আনন্দ তা আগে বুঝতে পারিনি।’’