তিন জেলার দূষণ ব্যবস্থা দেখতে অফিসার মাত্র ৪

অভিযোগ যে নেহাত অমূলক নয়, তার কারণ শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব যাদের সেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উপযুক্ত পরিকাঠামো কার্যত নেই। দফতর সূত্রে খবর, আগে দুই মেদিনীপুরে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করতে হত তাদের।

Advertisement

আরি‌ফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৭ ০০:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

গোটা হলদিয়া জুড়েই চোখে পড়বে হোর্ডিং ‘ক্লিন হলদিয়া, গ্রিন হলদিয়া’।

Advertisement

কিন্তু পুরবাসীর অভিযোগ, বাস্তবে তা নিয়ে মহকুমা প্রশাসনের তেমন সচেতনতা চোখে পড়ে না। প্রতি বছর ঘটা করে বিশ্ব পরিবেশ পালিত হয়। বিভিন্ন শিল্প সংস্থার উদ্যোগে গাছের চারাও বিলি করা হয়। অথচ শহরের দূষণচিত্র বদলায় না। যার জন্য বেহাল পরিকাঠামোকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।

অভিযোগ যে নেহাত অমূলক নয়, তার কারণ শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব যাদের সেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উপযুক্ত পরিকাঠামো কার্যত নেই। দফতর সূত্রে খবর, আগে দুই মেদিনীপুরে পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করতে হত তাদের। পরিকাঠামোর সমস্যা তখনই ছিল। তা আরও প্রকট হয় সম্প্রতি নতুন ঝাড়গ্রাম জেলার দায়িত্বও তাদের ঘাড়ে এসে পড়ায়। দফতরের এক কর্মী জানান, হলদিয়া নিউ মার্কেটে দফতরের প্রধান কার্যালয়। তিন জেলার দূষণ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় দেখভালের জন্য মাস দুয়েক আগে পর্যন্ত দু’জন অফিসার ছিলেন। এতগুলি জেলা দেখতে হলেও দফতরের নিজস্ব গাড়ি নেই। ভাড়ার গাড়ি দিয়ে কাজ চালাতে হয়। তবে সম্প্রতি অফিসারের সংখ্যা বেড়ে চার হয়েছে।

Advertisement

বেহাল পরিকাঠামোর কথা স্বীকার করেছেন তিন জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কুনাল সাহু। এ দিন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা উচিত তা আমরা দেখতে পারি না। কারণ, উন্নত পরিকাঠামোর অভাব।’’ তিনি জানান, পরিকাঠামোর অভাবেই তিন জেলা বিশেষত, হলদিয়ায় ছড়িয়ে থাকা শিল্প, কারখানাগুলিতে সঠিক নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘তিনটি জেলা মিলে দু’হাজারের মতো ছোট, মাঝারি শিল্প সংস্থা রয়েছে যাদের আমরা লাল তালিকাভুক্ত করেছি। তবে এ বিষয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ করা দরকার।’’

শুধু শিল্প-কারখানা নয়, পরিবেশ দূষণ নিয়ে তিন জেলায় বালি খাদানের বিষয়টিও তাঁদের দেখতে হচ্ছে বলে দফতরের এক আধিকারিক জানান। তিনি জানান, বহু ক্ষেত্রে লোকাভাবে সব কিছু খতিয়ে দেখা সম্ভব হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেবলমাত্র নমুনা সংগ্রহ করে কাজ সারতে হয়। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই এবং হলদিয়া বন্দর থেকে ট্রাকে কয়লা পরিবহণ নিয়ে পরিবেশ দূযণের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ, লরিগুলিতে ছাই, কয়লা বহনের সময় তা যথাযথ ভাবে ঢাকা দেওয়া না থাকায় দূষণ ছড়য়। এ বিষয়ে দূষণ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, দু’টি ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে হলদিয়া বন্দরের ম্যানেজার (ট্রাফিক) স্বপন সাহা রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা দূষণ বিধি মেনেই বন্দর থেকে ট্রাকগুলি ছাড়ি।’’ তাঁর দাবি, বন্দর থেকে বেরোনোর পর কিছু ট্রাক থেকে কয়লা চুরি হয়। আর তা করতে গিয়েই আচ্ছাদন নষ্ট করা হয়। ফলে দূষণ ছড়ায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন