চালক মদ খেলে জরিমানা ৫০১

মদ খেয়ে গাড়ি চালালেই জরিমানা দিতে হবে ৫০১ টাকা। এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে ঘাটাল শহরের ছোট গাড়ির চালক ও মালিকদের দু’টি সমিতি। ওই জরিমানা দিতে না পারলে একমাসের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে চালককে।

Advertisement

অভিজিৎ চক্রবর্তী

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ১৩:৪৫
Share:

মদ খেয়ে গাড়ি চালালেই জরিমানা দিতে হবে ৫০১ টাকা। এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে ঘাটাল শহরের ছোট গাড়ির চালক ও মালিকদের দু’টি সমিতি। ওই জরিমানা দিতে না পারলে একমাসের জন্য সাসপেন্ড করে দেওয়া হবে চালককে।

Advertisement

একটি ঘাটাল-পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডের অন্যটি হাসপাতাল মোড় সংলগ্ন এলাকার সংগঠন। তাদের দাবি, দুর্ঘটনা রুখতেই এমন কড়া পদক্ষেপ।

ঘাটাল শহরে একাধিক চালক ও মালিক সংগঠন রয়েছে। ছোট গাড়ির সংখ্যা প্রায় শ’দুয়েক। দীঘর্দিন ধরেই মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল এলাকাগুলিতে গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়ে আসছেন বাসিন্দারা।

Advertisement

তাঁদের অভিযোগ, এমনিতেই ফুটপাত বেদখল হয়ে গিয়েছে। রাস্তার উপরে বসে বাজার। ইমারতি সরঞ্জাম পড়ে থাকে রাস্তা জুড়ে। তার উপর ওই সঙ্কীর্ণ রাস্তাতেই বেপরোয়া গতিতে ছুটছে চলে বাস, ট্রাক, ছোট গাড়ি। ফলে দুঘর্টনা নিত্যসঙ্গী। এ সবের সঙ্গে রয়ে মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্য।

সম্প্রতি গতিতে রাশ টানতে, আর মদ্যপ চালকদের বাগে আনতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে জেলা পুলিশ। মদ্যপ চালকদের চিহ্নিত করতে ব্রেথ অ্যানালাইজার যন্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে জাতীয় সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ যে কোনও রাস্তায়। গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলিতে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে একাধিক স্পিড-ব্রেকার।

সাধারণ মানুষ ও চালকদের সচেতন করতে প্রচারও চালাচ্ছে পুলিশ। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে সচেতনতা মূলক সাইনবোর্ড। পুলিশ মনে করছে, বেপরোয়া গাড়ির গতিতে রাশ টানলেই দুঘর্টনা কমানো সম্ভব হবে।

সেই প্রেক্ষিতে মালিক-চালক সংগঠনগুলির এমন সিদ্ধান্তে খুশি পুলিশ কর্তারাও। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা দ্রুত ঘাটাল মহকুমার সমস্ত চালক ও মালিক সমিতিগুলির সঙ্গে বৈঠক করব। যাতে অন্যান্য এলাকাতেও এমন চালক-মালিকরা এমন সচেতন হতে পারেন।”

ওই দুই সংগঠনের তরফে শেখ মজিদ আলি এবং শেখ আবুল হোসেন জানালেন, এই পদক্ষেপ নিজেদের ভালর কথা ভেবেই। মজিদ আলি বলেন, “আমরা মৌখিক ভাবে বহুবার চালকদের সতর্ক করেছি। কাজ হয়নি। তাই কড়া সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।” আবুল হোসেনের কথায়, “রাস্তায় গাড়ি চললে আমরাও উদ্বেগেই থাকি। চালকের দায়িত্বজ্ঞানহীনতায় যাত্রীরা বিপদে পড়েন, ওই চালকের পরিবারে ক্ষতি হয়। ক্ষতি হয় গাড়ির মালিকেরও। তাই এই উদ্যোগ।’’

পেশায় গাড়ি চালক সঞ্জয় চক্রবর্তী, রাজা দাস, সুব্রত ধাড়াদের অভিজ্ঞতা বলে, কিছু চালক মনে করতেন মদ না খেলে তাঁরা গাড়ি চালাতেই পারবেন না। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘এ সব অজুহাত এ বার আর খাটবে না। মালিকদের কড়া সিদ্ধান্ত এবং পুলিশি ধড়পাকড়ে এই প্রবণতা ক্রমশ কমবে।”

দুর্ঘটনা রোধে পুলিশ মূলত তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছে। এক, মদ খেয়ে কোনও রকম গাড়ি চলানো যাবে না। দুই, চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে রাখতেই হবে। তিন, চালকদের বদলে খালাসিরা কোনও মতেই গাড়ি চালাতে পারবেন না। পুলিশের একাংশ বলছে, এতদিন নাম কা-ওয়াস্তে তল্লাশি চালিয়ে বকাঝকা করেই চালকদের ছেড়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এ বার কড়া নজরদারি শুরু হয়েছে। ফলও মিলছে হাতেনাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন