গোয়ালতোড় থেকে দলমার পালের ৮০ টি হাতি হাজির হয়েছে লালগড়ের জঙ্গলে। বন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার রাতে হাতিগুলি গোয়ালতোড়ের দিক থেকে মোহনপুরের জঙ্গল হয়ে লালগড়ে ঢোকে। হাতির দলটি একাধিক দলে ভাগ হয়ে লালগড় রেঞ্জের কাঁটাপাহাড়ি বিটের জঙ্গলে ঢুকে পড়েছে। তবে ভরা চাষের মরসুমে এলাকায় হাতির পাল চলে আসায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা। বন দফতর সূত্রের খবর, বুধবার রাতে লালগড়ের রামগড় ও কাঁটাপাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি করেছে হাতিরা।
চলতি বছরে হাতির হানায় ক্রমাগত প্রাণহানি ও সম্পত্তিহানির ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই এ রাজ্যে হাতিদের ঢোকা ঠেকাতে গত ৯ জুলাই হুলাপার্টি ও গ্রামবাসীদের নিয়ে কড়া নজরদারি শুরু করে বন দফতর। দলমার হাতির পালকে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে এ রাজ্যে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। এ ভাবে প্রায় এক মাস হাতিদের ঝাড়খণ্ড সীমানায় আটকে রাখার ফলে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছিল। কিন্তু কাঁকড়াঝোরের বাসিন্দা একাংশ গ্রামবাসীর অসহযোগিতায় গত অগস্টের গোড়ায় দলমা থেকে আসা প্রায় ৬৫ টি হাতি বেলপাহাড়ির জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। এরপরে হাতিগুলি লালগড় হয়ে গোয়ালতোড়, হুমগড়, আমলাগোড়ার রুট ধরে গড়বেতায় চলে গিয়েছিল। বাঁকুড়ার দিক থেকেও গোটা চল্লিশ হাতি এসে হাজির হয় গড়বেতায়।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা জানান, গোয়ালতোড়ের দিক থেকে সব মিলিয়ে প্রায় ৮০-৮৫টি হাতি লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ির জঙ্গলে ঢুকেছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “হাতিগুলিকে কংসাবতী নদী পার করিয়ে বিনপুরের মালাবতীর জঙ্গল দিয়ে দলমার রুটে ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। বন দফতর সূত্রের খবর, দলমার পালের হাতিগুলি একাধিক ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ঘোরাফেরা করছে। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতিরা। সেই কারণে ক্ষয়ক্ষতির বহর বাড়ছে।’’ বন দফতরের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত মেদিনীপুর ও রূপনারায়ণ বন বিভাগ এলাকায় ৫৫৭ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এ বার ভাল বৃষ্টি হওয়ায় এলাকায় ধানের ফলন ভাল হয়েছে। লালগড়ের কংসাবতী নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রচুর সব্জি চাষও হয়। এলাকায় হাতির পাল আসায় চাষিদের রাতের ঘুম
উড়ে গিয়েছে।