বিয়ে করব না, সটান স্কুলে ছাত্রী

শনিবার দাসপুরের কুলটিকরি ক্ষীরোদাময়ী হাইস্কুলে দুপুরে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে শোরগোল পড়ে যায়। স্কুল থেকে মেয়েটির বাড়িতে খবর দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাসপুর শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৭:১০
Share:

মামনি প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

বিয়ে করতে চাই না, পড়তে চাই—এমন আর্জি নিয়ে প্রধান শিক্ষকের ঘরে গেল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী মামনি প্রামাণিক।

Advertisement

শনিবার দাসপুরের কুলটিকরি ক্ষীরোদাময়ী হাইস্কুলে দুপুরে এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে শোরগোল পড়ে যায়। স্কুল থেকে মেয়েটির বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। মেয়েটির বাবা-মাকে স্কুলে নিয়ে আসা হয়। দাসপুর-২ এর বিডিও, চাইল্ড লাইন ও পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে বিকালে স্কুলে হাজির হন বিডিও অর্নিবাণ সাহু। পৌঁছয় চাইল্ড লাইন ও পুলিশ। সব পক্ষই মেয়ের বাবা-মাকে নাবালিকা বয়সে বিয়ে দিলে কী কী সমস্যা এবং আইনি জটিলতার বিষয়টি বোঝান। মেয়েকে ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেওয়া হবে না—এই বিষয়ে লিখিয়ে নেওয়া হয় তাঁদের থেকে। তারপর মেয়েটিকে বাবা-মার সঙ্গে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিডিও বলেন, “আমরা মেয়েটির উপর নজরদারি রাখব। ওর কোনও সমস্যা আছে কিনা তাও দেখা হবে।”

স্কুল সূত্রে খবর, ওই নাবালিকার বাড়ি দাসপুরের মাগুরিয়ায়। কয়েক দিন আগে থেকেই ওই নাবালিকার বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেছিল তার পরিবার। দু’দিন আগে ওই ছাত্রী বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করে। কিন্তু তাতে কোনও ফল হয়নি। তখন সে বিষয়টি বন্ধুদের জানায়। শনিবার সটান হাতে একটি চিঠি নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের ঘরে হাজির হয় ওই ছাত্রী। সেই চিঠিতে লেখা ছিল, তার বাবা-মা জোর করে বিয়ে দিতে চাইছে। এতে তার সায় নেই। সে আরও পড়তে চায়। মেয়ের জেদের কাছে হার মেনেছেন বাবা স্বপন প্রামাণিকও। তবে একই সঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘রাজমিস্ত্রির কাজ করে সংসার চালাই। পণ ছাড়াই বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। ছেলেও ভাল। তাই রাজি হয়ে গিয়েছিল।’’ দাসপুর এলাকায় নাবালিকা বিয়ের উদাহরণ আগেও রয়েছে। সরকারি প্রচার ও প্রকল্প সত্ত্বেও এই প্রবণতা আটকানো যায়নি। তার মধ্যে মামনি সত্যিই ব্যতিক্রম।

Advertisement

কুলটিকরি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সমীরণ চট্টোপাধ্যায় বললেন, “ওই মেয়েটি আমাদের স্কুল ও সমাজের গর্ব। ওকে সামনে রেখে স্কুলে সচেতনতা বাড়াবো।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন