প্রতীকী ছবি।
শিশু মৃত্যুর ঘটনার তদন্তেও মিলল গাফিলতির প্রমাণ। মঙ্গলবার তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক গৈরিক মাজিকে শো-কজ করেছেন ঝাড়গ্রামের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি।
গত রবিবার ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ফিমেল সার্জিক্যাল বিভাগে মৃত্যু হয় এক বছরের রূপম মাহাতোর। সে দিনই তার বাবা সুপােরর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, শনিবার ভর্তি হওয়ার পর থেকে চিকিৎসক একবারের জন্যও দেখে যাননি রূপমকে। বিনা চিকিৎসায় তাঁর শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বিভাগীয় তদন্তেও জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে গৈরিকবাবু রূপমকে দেখতেই যাননি।
যদিও অভিযোগ ওঠার পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে গৈরিকবাবু দাবি করেছিলেন, শনিবার গভীর রাতে তিনি শিশুটিকে দেখতে গিয়েছিলেন। তখন তার মা ঘুমিয়ে ছিলেন। ওষুধপত্র লিখে দিয়ে নার্সকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়ে আসেন বলে তাঁর দাবি।
সাঁকরাইলের চুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রূপমের বাম উরুতে পুঁজ জমে ছিল। জ্বরও ছিল। সে জন্য শিশুটিকে তার মায়ের সঙ্গে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ রবিবার সকাল পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক শিশুটিকে দেখতে যাননি। রবিবার সকাল ৯টা নাগাদ তার মত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
শনিবার রাতে ফিমেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন শল্য চিকিৎসক গৈরিক মাজি। রূপমের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতাল সুপার মলয় আদক তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়েন। সোমবার রিপোর্ট জমা পড়ে সিএমওএইচ-এর কাছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তদন্তকরীরা কর্তব্যরত নার্সের এবং গৈরিকবাবুর সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ ও আনুসঙ্গিক নথি যাচাই করেন।
যদিও এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি হাসপাতাল সুপার মলয় আদক। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি বলেন, “তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। কেন গৈরিকবাবু রোগী দেখতে যাননি, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।”
তৃণমূল প্রভাবিত ‘প্রোগ্রেসিভ ডক্টরস্ অ্যাসোসিয়েশন’-এর ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি গৈরিকবাবু অবশ্য এ দিন বলেন, “শো কজের নোটিস এখনও হাতে পাইনি। পেলে জবাব দেব।’’ এরই মধ্যে আজ, বুধবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব অনিল বর্মা ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল পরিদর্শনে আসছেন। সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা।