এই রাস্তাতেই গাড়ি রাখা নিয়ে বচসা বাধে। —নিজস্ব চিত্র।
সংকীর্ণ রাস্তায় গাড়ি ঢোকানো নিয়ে বচসা। তার জেরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারা অভিযোগ উঠল। সোমবার রাতে ওই ঘটনা ঘটেছে হলদিয়া পুরসভার ভাগ্যবন্তপুরে এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত জুলহাস রহমান (৪৭) ভাগ্যবন্তপুরের বাসিন্দা। স্থানীয় এবং মৃতের পরিবার সূত্রের খবর, বাড়ির পাশের একটি রাস্তা নিয়ে জুলহাসের ভাইদের সঙ্গে প্রতিবেশী শেখ আকবর নামে এক ব্যবসায়ীর পরিবারের কিছুদিন ধরে বিবাদ চলছিল। সংকীর্ণ এবং ভাঙাচোরা ওই রাস্তাটি সম্প্রতি ঢালাই করার পরিকল্পনা নিয়েছিল হলদিয়া পুরসভা। সে জন্য মাপজোকও হয়ে গিয়েছিল।
সোমবার সন্ধ্যায় শেখ আকবর একটি ছ’চাকার গাড়িতে ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, সংকীর্ণ রাস্তায় বড় গাড়ি ঢোকানোয় রাস্তা আরও ভাঙতে পারে বলে এর প্রতিবাদ করেছিলেন জুলহাস। অভিযোগ, তার জেরে আকবর এবং তার অনুগামীরা জুলহাসকে মারধর করে। তাঁর বুকে এবং তলপেটে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। সেখানেই লুটিয়ে পড়েন জুলহাস। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জুলহাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
নিহতের ভাই শেখ জসিমউদ্দিন বলেন, ‘‘দাদা বৌদিকে নিয়ে কলকাতায় থাকত। সোমবারই বাড়ি এসেছিল।’’ ঘটনায় শেখ আকবর, শেখ কবীর-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে সুতাহাটা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জুলহাসের আরেক ভাই শেখ সিরাজ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা সকলেই বিহারের আদি বাসিন্দা। ব্যবসার সুবাদে হলদিয়ায় বাড়ি বানিয়ে বছর দশেক ধরে থাকছিলেন। বছর খানেক আগেও অভিযুক্তেরা একটি খুনের মামলাতেও জড়িয়ে পড়েছিলেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
সোমবার রাতেই অভিযুক্তদের পরিবারের দুই মহিলা সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু মূল অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। নিহতের পরিবার ও প্রতিবেশীদের অভিযোগ, অভিযুক্তদের আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপাতত পুলিশি টহল রয়েছে সেখানে। স্থানীয় কাউন্সিলর প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘‘রাস্তা নিয়ে উভয়ের মধ্যে ঝামেলা ছিল। পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’
ঘটনার পর বাকি অভিযুক্তেরা গা ঢাকা দিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। এ দিন তাদের বাড়িও ছিল তালা বন্ধ। ফলে মূল অভিযুক্তর পরিজনের তরফেও কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। গোটা ঘটনায় হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’ এ দিন ধৃত দুই মহিলাকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক দুজনের জামিন খারিজ করে দিয়েছেন।