মণ্ডপ সেজেছে এরকমই ফ্লেক্সে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও প্লাস্টিক নিয়ে সচেতন করা হয়েছে, কোথাও সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে, আবার কোথাও মোবাইল নিয়ে। মেদিনীপুর শহরের কলেজ মোড়ের কয়েকটি পুজো মণ্ডপে এ বার রয়েছে সচেতনতার বার্তা। যা দেখে খুশি দর্শক এবং শহরের প্রশাসন। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক তথা মেদিনীপুর পুরসভার প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষের কথায়, ‘‘এ ভাবেই জনসচেতনতা গড়ে ওঠে।’’
মেদিনীপুর শহরের কলেজ মোড়ের সরস্বতী পুজোয় রাজনীতির আকচাআকচিই প্রধান আকর্ষণ। এ বারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এ বার তার বাইরে বেরিয়ে কয়েকটি মণ্ডপে সচেতনতার বার্তা দেখা গিয়েছে। ‘ব্যতিক্রম’- এর পুজো মণ্ডপে এ বার প্লাস্টিক এড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। মণ্ডপের কোথাও লেখা হয়েছে, ‘ভবিষ্যৎ পরিবেশের সুরক্ষা আমার এবং আপনার হাতে। প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন’, আবার কোথাও লেখা হয়েছে, ‘প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বর্জন করুন। আপনার পরিবারকে সুস্থ রাখুন।’ মেদিনীপুর শহরের অন্যতম বড় সমস্যা হল নিকাশি নালায় প্লাস্টিক জমে থাকা। সম্প্রতি প্লাস্টিক বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন দোকানে অভিযান চলছে। প্লাস্টিক রাখায় জরিমানা আদায়ের ঘটনাও ঘটেছে। প্লাস্টিক নিয়ে শহরবাসীকে সচেতন করতে মেদিনীপুরে মাইকে প্রচার শুরু করেছে পুরসভা। লিফলেট বিলি হচ্ছে। এ বার পুজোর মণ্ডপেও ওই সচেতনতার বার্তা উঠে এলো।
সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে সচেতনতার বার্তা রয়েছে ‘ইউরেকা’-র মণ্ডপে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটালে কী কী সমস্যা দেখা দেয়, সেটা বোঝানো হয়েছে এখানে। ফ্লেক্স সাঁটিয়ে পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহারে মানসিক অবসাদে ভুগছে আজকের প্রজন্ম। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সময়। তৈরি হচ্ছে ‘ভার্চুয়াল রিলেশনশিপ’। যেটির কোনও বাস্তবিক অস্তিত্ব নেই। ওই মণ্ডপের এক জায়গায় লেখা রয়েছে, ‘ইউরেকা ধিক্কার জানায় এই কুঅভ্যাসকে। আর স্বাগত জানায় সেই সুন্দর সমাজকে যেখানে স্মার্টফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া থাকবে। কিন্তু তার অতিরিক্ততা থাকবে না।’ ‘নো কম্প্রোমাইজ’- এর পুজো মণ্ডপেও রয়েছে সচেতনতার বার্তা। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘বাচ্চাদের মোবাইল গেম থেকে দূরে রাখুন।’’
কিছু মণ্ডপ ও প্রতিমায় নতুনত্ব রয়েছে। যেমন ‘রেড ক্যাসল’-এর মণ্ডপে রয়েছে গ্রামীণ ছোঁয়া। এখানে মন্ডপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে কুলো। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা শেখ সরফরাজ বলছিলেন, ‘‘নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম। সেখান থেকেই এই ভাবনা।’’
কলেজ মোড়ের কোনও পুজোতেই এ বার সাউন্ড বক্স নেই। মাধ্যমিকের জন্য মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি পুলিশ- প্রশাসন। ঘুরে ঘুরে সব পুজো দেখার পরে অনেককেই বলেছেন, ‘‘এ বারের পুজো অন্য রকমই বটে।’’