কার্ড এসে পড়ে রয়েছে। অথচ তা বিলি হয়নি!
আধার কার্ডের জন্য মেদিনীপুর শহরের বহু মানুষের ছবি তোলা হয়েছিল আগেই। রসিদও রয়েছে। কিন্তু তাঁরা কার্ড পাননি। পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে বসল ডাক বিভাগ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ, মঙ্গলবার জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। মেদিনীপুরের সিনিয়র পোস্ট মাস্টার বিকাশকান্তি মিশ্র বলেন, “শহরে আধার কার্ড ঠিকমতো বিলি হচ্ছে না বলে অভিযোগ পেয়েছি। কিছু এলাকায় শুধু কার্ড দেওয়া হচ্ছে, খাম দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ। এমনটা হলে তা দুর্ভাগ্যজনক। এই সব অভিযোগ যাতে পরবর্তী সময়ে না ওঠে তা দেখছি। এ ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। মঙ্গলবার বৈঠকও ডেকেছি।’’
মেদিনীপুর পুরসভার এক সূত্রে খবর, আগেই শহরের ৭০-৮০ শতাংশ মানুষের আধার কার্ডের জন্য ছবি তোলা হয়েছিল। তবে সব কার্ড বিলি হয়নি। বিলি হয়েছে ৪০-৫০ শতাংশ কার্ড। মেদিনীপুরের কালগাং-এর বাসিন্দা সায়ন দাস, শেফালি দাসেরা যেমন রবিবার আধার কার্ড পেয়েছেন। তবে তাঁদের খাম দেওয়া হয়নি। মুখবন্ধ খাম ছিঁড়ে শুধু আধার কার্ডটাই দেওয়া হয়েছে। সায়নরা ছবি তুলেছিলেন বছর তিনেক আগে। এতদিন তাঁদের কার্ড ডাকঘরে পড়েছিল। মেদিনীপুর শহরের কাউন্সিলর সৌমেন খান বলেন, “আধার কার্ড এসে ডাকঘরে পড়ে থাকছে। তা বিলি হচ্ছে না। যেখানে নানা ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে, সেখানে এটা কেন হবে?’’
মেদিনীপুর শহরে ডাক পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। দিনের পর দিন ধরে চিঠি পড়ে থাকে ডাকবাক্সে, না হয় ডাকঘরে। শহরে ডাক পরিষেবার ২৩টি বিট রয়েছে। প্রতি বিটে একজন করে পোস্টম্যান থাকার কথা। তবে সব মিলিয়ে পোস্টম্যান রয়েছেন ৬ জন। বাকি বিটগুলোয় চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। সময়ে চিঠি না পৌঁছনোর অভিযোগ পেয়ে তিনজন চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে সরিয়ে নতুন কর্মী নেওয়া হয়। তাও পরিস্থিতির বিশেষ হেরফের হয়নি। শহরের বাসিন্দা সায়ন্তী মান্না, অনিষা সামন্তদের অভিযোগ, মেদিনীপুর শহরে ডাক বিলি ব্যবস্থা পুরোপুরি বেহাল। জরুরি চিঠিও সময়ে পাওয়া যায় না। মেদিনীপুরের সিনিয়র পোস্ট মাস্টার বিকাশকান্তিবাবুর অবশ্য আশ্বাস, “নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আধার কার্ড হোক কিংবা চিঠিপত্র, সব সময়ের মধ্যেই পৌঁছনো উচিত। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। আশা করি, ওই সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।”
ছবিটা কবে বদলায়, পড়ে থাকা আধার কার্ডগুলো কবে বিলি হয়, সেটাই দেখার!