প্রতীকী ছবি।
শহর কলকাতায় বসে ঘোরতর সমস্যায় পড়েছে গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬ থানার পুলিশ।
এ রাজ্যে এসেছিল চোর সন্দেহে একজনকে ধরতে। অভিযুক্ত মহিলাকে ধরেও ফেলেছিল। কিন্তু, দুম করে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে তিনি এখন অগ্নিদগ্ধ।
আপাতত এসএসকেএম হাসপাতালে শুয়ে ৩০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ ওই মহিলা রুম্পা বিবি। আর যতদিন না তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন, তত দিন গুরুগ্রাম পুলিশের দলটিকে বাধ্য হয়ে থাকতে হবে কলকাতাতেও। সেই দলে রয়েছেন দু’জন মহিলা কনস্টেবলও। নিত্য দিন পাহারা দিতে হচ্ছে রুম্পাকে।
বৃহস্পতিবার হলদিয়া আদালত থেকে নেওয়া ট্রানজিট রিম্যান্ড নিয়ে শনিবারেই গুরুগ্রামের আদালতে পেশ করার কথা ছিল রুম্পাকে। কিন্তু, সে সব এখন ভেস্তে গিয়েছে। শনিবার আবার হলদিয়া আদালতে গুরুগ্রামের পুলিশ সেই ট্রানজিট রিমান্ড বাতিল করার আবেদন জানাবে। বুধবার রুম্পার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁর স্বামী আফতাবুল মল্লিককেও। তাঁর ক্ষেত্রেও ট্রানজিট রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। তাঁকে অবশ্য বৃহস্পতিবারে বিমানে করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় দিল্লি। শুক্রবার তাঁকে গুরুগ্রামের আদালতে পেশ করা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, ৩০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে রুম্পার। ফলে, তাঁর জীবনের ঝুঁকি নেই। তবে, ঠিক কবে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন তা পরিষ্কার নয়। বেশ উত্তেজিত হয়ে আছেন ৩২ বছরের রুম্পা। হাসপাতালে চিৎকার চেঁচামিচি জুড়ে দিয়েছেন। শুক্রবার খবর পাওয়া গিয়েছিল, হয়তো বন্ড দিয়ে রুম্পাকে ছাড়িয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। কিন্তু, গুরুগ্রাম পুলিশের বক্তব্য, ১৪ লক্ষ টাকা চুরির অভিযোগে ধৃতকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে উড়িয়ে নিয়ে যেতে ঢাকের দায়ে মনসা না বিকিয়ে যায়।
রুম্পার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর। তিনি গুরুগ্রামে বিজেপি নেতা সুশীল কুমারের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করার সময়ে ১৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। তিনি আদতে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া পুর এলাকার ঝিকুরখালির বাসিন্দা। গুরুগ্রামের সেক্টর ৫৬ থানা থেকে দিলীপ সিংহ ২ মহিলা ও ২ পুরুষ কনস্টেবলকে নিয়ে রুম্পাকে খুঁজতে পৌঁছোন হলদিয়ায়।
সব কিছুই পরিকল্পনামাফিকই চলছিল। হলদিয়ার দুর্গাচক থানার সঙ্গে যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে রুম্পাকে গ্রেফতার, তাঁর কাছ থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার, আফতাবুলকে গ্রেফতার, হলদিয়া মহকুমা আদালত থেকে দু’জনের ট্রানজিট রিমান্ডের অনুমতি — সব। কিন্তু, বৃহস্পতিবার আফতাবুলকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য যখন দুর্গাচক থানায় আসে হরিয়ানা পুলিশ, তখন গাড়িতে ছিলেন রুম্পা।
পুলিশ জানিয়েছে, হঠাৎ রুম্পা থানার শৌচালয়ে যেতে চান। তাঁকে শৌচালয়ে নিয়ে যান এক মহিলা কনস্টেবল। কিছুক্ষণ পরেই শৌচাগার থেকে রুম্পার চিৎকার শোনা যায়। চিৎকার শুনে মহিলা কনস্টেবল দরজা ভেঙে অগ্নিদগ্ধ রুম্পাকে উদ্ধার করেন। তাঁকে প্রথমে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তমলুক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখান থেকে আনা হয় কলকাতায় এসএসকেএমে।