আলু, পটলের মতো চাইলেই মেলে অ্যাসিডও

দাসপুরে অলি-গলিতে ছড়িয়ে রয়েছে সোনার গয়না তৈরির কারখানা। সোনার কাজে অ্যাসিড লাগে। তাই কারখানাগুলিতে এমনিতেই মজুত থাকে অ্যাসিড। অভিযোগ, অ্যাসিড কেনাবেচার নিয়ম সম্পর্কে এখনও অন্ধকারে ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাই বেআইনি অ্যাসিড বিক্রিতে রাশ টানাও কঠিন হচ্ছে প্রশাসনের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

বিয়ারের বোতলে করেই সোনার দোকানগুলিতে আনা হয় অ্যাসিড। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ করুন অ্যাসিড বিক্রি—লক্ষ্মীর আর্তি পৌঁছয় না ঘাটাল- দাসপুরে।

Advertisement

দিল্লির তরুণী লক্ষ্মী #স্টপসেল অ্যাসিডের বার্তা নিয়ে দেশ জুড়ে আন্দোলনে নেমেছেন। সম্প্রতি সে বার্তা নিয়ে তিনি রাজ্যে‌ এসেছিলেন। কিন্তু কখনও যদি লক্ষ্মী পৌঁছন ঘাটাল-দাসপুরে কী দেখবেন তিনি? দেখবেন সেখানে আলু-পটলের মতই বিক্রি হচ্ছে অ্যাসিড। সোনার গয়না তৈরির সরঞ্জামের দোকানগুলিতে ডাঁই হয়ে খালি বোতলে মজুত আছে সালফিউরিক-নাইট্রিক অ্যাসিড। কোথাও কোনও নিয়ম নেই।

দাসপুরে অলি-গলিতে ছড়িয়ে রয়েছে সোনার গয়না তৈরির কারখানা। সোনার কাজে অ্যাসিড লাগে। তাই কারখানাগুলিতে এমনিতেই মজুত থাকে অ্যাসিড। অভিযোগ, অ্যাসিড কেনাবেচার নিয়ম সম্পর্কে এখনও অন্ধকারে ব্যবসায়ীদের একাংশ। তাই বেআইনি অ্যাসিড বিক্রিতে রাশ টানাও কঠিন হচ্ছে প্রশাসনের। সব বিক্রেতারাই কি নিয়ম মেনে অ্যাসিড বেচেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দাসপুরের সাগরপুরের এক অ্যাসিড বিক্রেতা বলেন, “আমাদের দু’পুরুষের ব্যবসা। গয়না তৈরির সরঞ্জাম বিক্রি করতে হলে অ্যাসিড সরবরাহ তো করতেই হবে। কই এনিয়ে পুলিশ-প্রশাসন তো কোনও চাপ দেয়নি।”

Advertisement

ঘাটাল-দাসপুরে প্রায়ই অ্যাসিড হানার খবর প্রকাশ্যে আসে। ঘাটালেই অ্যাসিড হামলার জেরে এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। দাসপুরেরও একাধিক ঘটনা ঘটেছে।

অ্যাসিড বিক্রিতে সুপ্রিম কোর্টের নানা বিধি নিষেধ আছে। নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য সরকারও নানা পদক্ষেপ করেছে। বিষক্রিয়া আইনে(১৯১৯) স্পষ্ট ভাবে বলা রয়েছে অ্যাসিড বিক্রির ক্ষেত্রে কোথা থেকে লাইসেন্স দেওয়া হবে, কীভাবে বিক্রি করতে হবে। তা হলে শুধুমাত্র প্রশাসনিক সক্রিয়তার অভাব? জেলা শাসক পি মোহনগাঁধী আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রি অপরাধ। মহকুমাশাসকদের অভিযান করে মামলার নির্দেশ দেব। নিয়ম না মেনে অ্যাসিড বিক্রি বরদাস্ত করব না।”

প্রশ্ন উঠছে, কেউ যদি নথি দিয়ে অ্যাসিড কিনে তা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে? প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ বলছেন, যদি সঠিকভাবে নিয়ম মানা হয়, যদি বিক্রেতা সমস্ত নথি যাচাই করেন তাহলে আম জনতার কাছে অ্যাসিড পৌঁছনোর কথা নয়। কিন্তু সমস্যা হল, নিয়ম তো আছে। মানলে তো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন